বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কে সেমিনার করার দাবি


মোঃ আককাস আলী, নওগাঁ প্রতিনিধি :: নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলাটি ১০টি ইউনিয়ন ও ৯০টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ উপজেলায়  নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি স্থানীয় এম পি, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ২জন ভাইস চেয়ারম্যান, ১০ জন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড সদস্য পুরুষ ৯০জন ও নারী সদস্যা ৩০ জন। উপজেলায় স্বাস্থ্য সেবা দু’টি ভাগে বিভক্ত। একটি স্বাস্থ্য হাসপাতাল, অন্যটি পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ। উপজেলার বেশির ভাগ জনগন হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কে জানলেও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে ভাবেননা। অনেকেই জানেন না। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ও পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী এ উপজেলায় মোট জনসংখ্যা ২ লক্ষ ৬২ হাজার ১শ ১৬ জন। এত জনসংখ্যার জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের একজন কর্মকর্তা, ১জন মেডিক্যাল অফিসার, ৩জন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার, ফার্মাসিষ্ট ২ জনের মধ্যে ১ জন কর্মরত থাকলেও তিনি মাতৃত্ব কালিন ছুটিতে। অন্যটি খালি। পরিবার কল্যান পরিদর্শীকা ১২ জন। পরিবার কল্যান পরিদর্শক ১০ জনের মধ্যে কর্মরত ৬ জন। বাকী গুলো খালি। পরিবার কল্যান সহকারী ৫৫ জনের মধ্যে কর্মরত ৪৭ জন। বাকী গুলো খালি দীর্ঘ সময় ধরে। তারপরও এতগুলো কর্মকর্তা কর্মচারী পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে কর্মরত থাকলেও এদের কাজ কি ? তা অনেকেই জানেন না।  এমন দৃশ্য উপজেলার সর্বত্র। অধিকাংশ গ্রাম ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সেখানে কোন স্বাস্থ্য সেবা নেই। উপজেলার চেরাগপুর পরিবার কল্যান কেন্দ্রে কথা হয় পরিবার কল্যান পরিদর্শীকা শেহেলী ফেরদৌস এর সাথে তিনি জানান, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার মকবুল হোসেন নেই। তিনি সপ্তাহের রবিবার ও বুধবার উপজেলা সদরে থাকেন। এছাড়া তাকে এখানেই পাওয়া যায়। কেন্দ্রে আসা কহিনুর নামে এক মহিলার সাথে কথা হলে তিনি জানান, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ কি এটা সে জানেনা। তবে মাঝে মাঝে এই অফিসের কিছু মহিলা গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের জন্ম নিয়ন্ত্রন পিল বড়ি, কনডম ও ইনজেকশন দিয়ে যায়। অনেক সময় কেন্দ্রে এসে কিছু ওষুধ নিয়ে যায়। এছাড়া তাদের আর কি কাজ সেটা জানেন না। এমনিতেই উপজেলার উপর দিয়ে আত্রাই নদী প্রভাবিত হওয়ায় ভৌগলিক অবকাঠামোর দিক দিয়ে নদীর পশ্চিম পাড়ের ৩টি ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের স্বাস্থ্য সেবা থেকে সব সময় বঞ্চিত। অথচ উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, নদীর পশ্চিম পারে ৩টি ইউনিয়ন খাজুর, হাতুড় ও চাঁন্দাশ। এই ৩টি ইউনিয়নের জনসংখ্যা পুরুষ  ২৮ হাজার ৫শ ১৫ জন ও মহিলা ২৯ হাজার ৮শ ৩৭ জন। এত বড় জনসংখ্যার ৩ ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র সম্পর্কে একে বারে অজ্ঞ। অথচ সারা বিশ্বে জনসংখ্যা রোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ব্যাপক হারে কাজ করছে। এর ধারাবাহিকতায় সরকার স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ আলাদা করে কাজ শুরু করেন। জনসংখ্যা রোধে বিভিন্ন গ্রামে দায়িত্ব পালনকারিরা বাড়ী বাড়ী গিয়ে বড়ি, কনডম ও ইনজেকশন বিতরন করে থাকেন বলে পরিবার পরিকল্পনা অফিস সূত্রে জানা যায়। অফিস সহকারী বলেন, মহিলাদের লাইগেশন ও পুরুষদের এন এস বি’র মাধ্যমে জন্ম নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব। কিন্তু এর সুফল কতটা পাচ্ছে জানতে নানা জনের সাথে কথা বললে উপজেলার কুন্দনা গ্রামের চামেলী রায়, শেফালী বেগম, হোসেন আলী, আজাহার, বিলছাড়া গ্রামের খবির উদ্দীন, দবির উদ্দীন, হাসনাহেনা, দেওয়ানপুর গ্রামের সারতী উড়াও, গোলাপী পাহান, কাঞ্চন গ্রামের বক্কর, শাহানাজ, বাগডোব গ্রামের আরজিনা, সদরের হাসেন আলী, মরিয়ম খাতুন ও শাহানাজ প্রমুখ জানান, তারা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কে জানেন না। তাই এ বিষয়ে নানা ধরনের সভা-সমাবেশ, সেমিনার, উঠান বৈঠক করে জনগনকে সচেতন করার দাবি জানান। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলাউদ্দীন আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সেবা নিশ্চিত করে জনসংখ্যা রোধে জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতির ব্যাপারে তারা নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।#


Ruby