সোমবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১২

রহস্যে ঘনিভূত; জীবিত না মৃত্যু! রাজশাহীর বানেশ্বরে নিখোঁজ হওয়া গৃহবধূর ১মাস ১০ দিনেও সন্ধান মেলেনি

মোঃ রফিকুজ্জামান (রান্টু) রাজশাহী থেকে :: রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়া পুঠিয়ার বানেশ্বরের এক গৃহবধূর ১ মাস ১০ দিন অতিবাহিত হলেও তার কোন সন্ধান মেলেনি। নিখোঁজ গৃহবূধুকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন মহলে ঘনিভূত রহস্যের বেড়াজাল। কেউ বলছে, স্বামী-শ্বাশুরি নির্যাতনের পর হত্যা করে গুম করেছে। কেউ বলছে, স্বামী-শ্বাশুরি নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে আতœহত্যা করেছে। আবার কেউ বলছে, শারিরিক অসুস্থ ও স্বামী-শ্বাশুরি নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে দূরে কোথও গিয়ে আতœগোপন করে আছে। নিখোঁজ হওয়া গৃহবধূ হলেন, পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরের থান্দারপাড়া গ্রামের মোঃ মানিকের, স্ত্রী মোছাঃ মিলি বেগম (২৪) ।

জানা যায়, চারঘাট উপজেলার ঝিকরা গ্রামের বোরহান আলীর মেয়ের সঙ্গে প্রায় ৬ বছর পূর্বে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরের থান্দারপাড়া গ্রামের ইয়াচিনের ছেলে মোঃ মানিকের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে দুইজনের সংসার জীবন সুন্দরভাবে চলে আসছিল। কিন্তু গত ২৪ মার্চ সন্ধ্যার দিকে মিলি বেগম তার একমাত্র সন্তান মার্শালকে বাড়িতে রেখে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ গৃহবূধুর পিতা মোঃ বোরহান আলী জানান, ২৪ মার্চ তার জামাই মানিক মোবাইল যোগে, মিলিকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানাই। এরপর বোরহান আলী ছুটে যান তার জামাই বাড়িতে। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন সন্ধ্যার দিকে মিলি বেগম তার এমাত্র সন্তান মার্শালকে বাড়িতে রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছে। এ ব্যাপারে মিলি বেগমের স্বামী মোঃ মানিক মিয়া বলেন, ২৪ মার্চ শনিবার বিকেলে আমার স্ত্রীর সাথে সামান্য কথা কাটা-কাটি হয়। এরপরে আমি বাজারে চলে যাই। সন্ধ্যার পরে বাড়ি ফিরে দেখি স্ত্রী নেই। তারপর শ্বশুর বাড়িতে সংবাদ দিই এবং আতœীয়-স্বজনের বাড়িতে অনেক খোঁজ-খোঁজি করেও তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। এদিকে মিলি বেগমের মা রেতিয়া বেগম মেয়ের শোকে পাগল প্রায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রতিবেশী জানান, বিয়ের পর থেকে তারা দুইজন ভালো-ভাবেই সংসার করছিল। কিন্ত নিখোঁজ হওয়ার বেশ কিছুদিন আগে থেকে তার শাশুড়ী ও স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া-বিবাধ লেগেই থাকত। কি কারণে তাদের মাঝে ঝগড়া হতো তা আমার সঠিক জানা নেই। নিখোঁজ হওয়ায় দিন সন্ধ্যায় পুঠিয়ার বেলপুকুর রেলগেটে ট্রেনেকেটে আতœহত্যা করা লাশটি  গৃহবধু মিলি বেগমের হতে পারে বলে ধারণা করেন।

মিলির পিতা বোরহান আলী জানান, অনেক খোঁজা-খোঁজি করে মেয়ের কোন সন্ধান না পেয়ে গত ২৭ মার্চ পুঠিয়া থানায় একটি জিডি করি। মিলির শ্বশুর মোঃ ইয়াছিন আলী জানান, আমরাও অনেক খোঁজা-খোঁজি করে ছেলেবউ-এর কোন সন্ধান না পেয়ে গত-২৯/০৩/১২ইং তারিখে পুঠিয়া থানায় একটি জিডি করি (জিডি নং-১১৩৩)। মিলি বেগমের একমাত্র সন্তান মার্শাল (৫) শুধু মা, মা বলে কাঁদছে। এব্যাপারে পুঠিয়া থানার এসআই শফিক জানান, নিখোঁজের কিছুদিন পর থানায় জিডি হয়েছে এবং আমি নিজে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছি। তবে কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি, মিলি বেগমকে না পাওয়া গেলে মামলা করা হবে বলে তিনি জানান।

 
Ruby