বাঘা নিউজ ডটকম, মোঃ আককাস আলী, নওগাঁ প্রতিতিনিধি, ২৮ ডিসেম্বর : রাত তখন ৮ টা, শীতের হারকাপানো ঠান্ডা উপেক্ষা করে কিছু মানুষ জটলা করে ঘিরে রেখেছে দু মহিলা কে । কাছে এগিয়ে গিয়ে দেখা গেল শেফালীর মাস কলাইয়ের রুটি খেতে মানুষের অপেক্ষার এ জটলা। রুটির সাথে ঝাল ধুনাপাতার চাটনির স্বাদ নিতে যেন হুমরি খেয়ে পড়েছে এসব মানুষ। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১০ পর্যন্ত নওগাঁর মুক্তির মোড় শহীদ মিনারে শেফালীর মাস কলাইয়ের রুটির নিয়মিত গ্রাহক এরা। প্রতি পিছ রুটির দাম ১০ টাকা। কেউ কিনছেন বাসায় নিয়ে পরিবারকে স্বাদ বুঝাতে আবার কেউ অফিসের বসকে খাওয়ানোর জন্য। সব মিলিয়ে জমে উঠেছে শেফালীর মাস কলাইয়ের রুটি বিক্রি। দু হাতে রুটি তৈরিতে ব্যস্ত শেফালী জানালেন ”সিত কালে ব্যবছা ভালো হইছে” প্রতিদিন ১৭০ থেকে ১৮০ পিছ রুটি বিক্রি হয় । এতে খরচ বাদ দিয়ে দিনে ৬/৭ শ টাকা আয় হচ্ছে । শেফালীর এ ব্যবসায় সহযোগি রয়েছে তার স্বামী আনছার আলী ও বৃদ্ধ মা আমিরুননেছা । চাপাই নবাব গঞ্জের রহনপুর থানার বাসিন্দা শেফালী নওগাঁর বালু ডাংগা বাসষ্টান্ডের স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছে গত ১০ বছর আগে । মাস বলাইয়ের রুটি বিক্রি করে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে বেশ ধুম করে। জমি কিনে সেখানে তিন কক্ষ বিশিষ্ট ইটের ঘর হয়েছে শেফালীর । আর এতসব কিছুর মুলে রয়েছে তার এ ব্যবসা ।স্থানীয় মাতাজী মোড়ে সারা বছর শেফালী বিক্রি করে তার রুটি । শীত বাড়ার সাথে মুক্তির মোড়ে রাতে এখন বেশি রুটি বিক্রি হয় বলে জানালেন শেফালী। স্থানীয় হাট থেকে মাস কলাই সংগ্রহ করে তার স্বামী আনছার আলী । এরপর মেশিনে ভাংগা হয় মাস কলাই আর সেই আটার তৈরি রুটির এত কদর । শেফালীর দু হাতের তালুর নিপুন ভাজে তৈরি করা মাস কলাইয়ের রুটির স্বাদ যে একবার পেয়েছে সে মনে রেখেছে জানালেন তার কজন নিয়মিত গ্রাহক । শেফালীর এ কারবারে তার মা ও স্বামী সহযোগী হিসাবে রয়েছে । প্রতি মাসে কেমন আয় হয় জানতে চাইলে মৃদু হেসে জানায় ”মাছে ১৫ থেকে ষোলো হাজার টাকা থাকছে” উম্মক্ত খোলা আকাশের নিচে শেফালীর এ কারবার দেশের হাজারো বেকার যুবকের কাছে প্রেরনা হতে পারে বলে সেখানে থাকা ক’জনের মন্তব্য ।
