শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১১

ভিক্ষা করে জীবন যুদ্ধে পরাজিত মুক্তিযোদ্ধা হরিকান্ত মন্ডল

বাঘা নিউজ ডটকম, রনজিৎ কুমার রায়,   রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) ১০ ডিসেম্বর : রাজারহাট উপজেলাধীন চাকির পশার ইউনিয়নের খুলিয়াতারী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা হরিকান্ত মন্ডল (৬৪)। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে দেশকে শত্রু মুক্ত করার লক্ষে ৬নং সেক্টরে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালসহ সেক্টর কমান্ডার দেলওয়ার হোসেনের অধীনে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন তিনি। বর্তমানে ভিক্ষাবৃত্তি করে হতদরিদ্র বীর মুক্তিযোদ্ধা হরিকান্ত মন্ডলকে ৮ সদস্যের পরিবারের ভরন-পোষন চালাতে হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা পান মাত্র ২ হাজার টাকা। যা দিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যদের এক সপ্তাহ চলে। তাও আবার ৬ মাস পর ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে হয়। তার ২ পুত্র চায়ের দোকানের শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। অন্যের জায়গায় এক চিলতে জমিতে ঘেঁষা-ঘেঁষি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে দো’চালা একটি ঘরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি। বয়সের ভারে শরীর ন্যূয়ে পড়া এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বর্তমানে নানান জটিল রোগে আক্রান্ত। অভাবের তাড়নায় প্রতিদিন কাক ডাকা ভোর হলে ঘাঁড়ে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত বাড়াতে হয় তাকে। দেশ মার্তৃকার টানে জীবনকে বাজী রেখে যিনি দেশকে শত্রু মুক্ত করার জন্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন, তিনি আজ তার জীবন যুদ্ধে পরাজিত একজন যোদ্ধা। তিনি প্রতিনিধিকে জানান, বর্তমানে ভিক্ষা করে যে রোজগার হয় তা দিয়ে দু’বেলা পেট পুড়ে ডাল ভাত খেতে পারেনা তার পরিবার। অথচ ওষুধ কেনার টাকা কোথায় পাইম বাবা? উল্লেখ্য, হতদরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা হরিকান্ত মন্ডল দেশ স্বাধীনের ৪০ বছর পেরিয়ে গেলেও প্রতিটি জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে সক্রিয় ভাবে উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তিনি আক্ষেপ করে আরো বলেন, স্বাধীনতার এত দিনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য সমাপ্ত না হওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং তিনি বেঁচে থাকতে যেন যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজম, নিজামী, মুজাহিদ, কামরুজ্জামান ও সাঈদীর ফাঁসি কার্যকর দেখে যেতে পারেন, সেজন্য তিনি আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন।
Ruby