রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১২

উত্তরের অর্ধশতাধিক নদী মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে

বাঘা নিউজ ডটকম, মোঃ আককাস আলী, নওগাঁ প্রতিনিধি  :: সংস্কারের অভাবে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে উত্তরের অর্ধশতাধিক নদী। উত্তরাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত যেসব নদী এখনও কোনরকমে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে সেগুলোরও পানিপ্রবাহ কমে মরাখালে পরিণত হয়েছে। এসব নদীতে এক সময় ঢেউয়ের তালে চলাচল করেছে অসংখ্য পালতোলা নৌকা। নদী সংলগ্ন এলাকাগুলোতেও গড়ে উঠেছিল অনেক জনপদ ও হাটবাজার। নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এসব জনপদসহ আশপাশের অসংখ্য মানুষ ওইসব হাটবাজারে ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে খুঁজে পেয়েছিলেন জীবন-জীবিকার পথ। এসব নদীর অথৈ পানি দিয়ে কৃষকরা দুই পাড়ের শত শত হেক্টর জমিতে ধান, গম, পাট ও আখসহ নানান তরিতরকারীর ফসল ফলাতেন। প্রকৃতির অফুরন্ত রিজার্ভ পানিতে নানা ফল-ফসলে ভরে উঠেছিল মাইলের পর মাইল। সে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। ছোট বড় নানা প্রজাতির মাছেরও অফুরন্ত উৎস ছিল এসব নদী। এসব এখন কেবলই কালের স্বাক্ষী। সময় গড়িয়ে চলার সাথে সাথে সেই ভরা যৌবনা নদীগুলো এখন মরাখালে পরিণত হতে চলায় নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা ওইসব হাটবাজার এখন হয়েছে বিরাণ অঞ্চল, কৃষি জমিগুলো পরিণত হয়েছে ধু-ধু প্রান্তরে, জেলে পাড়াগুলোও হয়ে গেছে বীলিন। এক কথায় থমকে গেছে নদী আর নিভে গেছে বিপুল সম্ভাবনা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পানি আগ্রাসন ও সংস্কারের অভাবে উত্তরাঞ্চলের অন্যতম নদী তিস্তা ও পদ্মার অস্তিত্ব এখন চরম হুমকীর মুখে পড়েছে। এছাড়া উত্তরের আত্রাই, পূণর্ভবা, তুলসিগঙ্গা, মহানন্দা, ধরলা, দুধকুমার, স্বতী, ঘাঘট, নীলকুমার, বাঙ্গালী, বড়াই, মানাশ, কুমলাই, লাউতারা, ধুম, বুড়িঘোড়া, সোনাভরা, হলহলিয়া, লোহিত্য, ঘরঘরিয়া, রতœাই, পিছলা, টাঙ্গান, ত্রিমোহনী, তালমা, ফুলকুমার, ধরণী, জিঞ্জিরাম, বুড়িতিস্তা, চাড়াল কাটা, ধানজাই, সানিয়া, কাঁটাখালি, সালমারা, রাইঢাক, খারুভাজ, যমুনেশ্বরী, চিকলি, করতোয়া ও ইছামতিসহ অর্ধশতাধিক নদী মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। এতে এসব নদীকে কেন্দ্র করে জেগে ওঠা বিপুল সম্ভাবনার প্রাণের স্পন্দন থেমে গেছে। স্থবির হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষের নদী কেন্দ্রীক জীবন-জীবিকা। এ সম্ভাবনা একদিনে থেমে যায়নি। সম্ভাবনাময় নদীগুলো আস্তে আস্তে অস্তিত্ব সংকটে পড়লেও এ নিয়ে মাথা ঘামায়নি কেউ। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হলে অন্তত অস্তিত্ব সংকটে পড়তোনা এক সময়ের খরস্রোতা উত্তাল এসব নদী।
Ruby