রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

খুলনার কাছে ঢাকার হার



হার্শেল গিবস ও আন্দ্রে রাসেলের সঙ্গে আলোচনা করে ফিল্ডিং সাজাচ্ছেন খুলনার অধিনায়ক সাকিব আল হাসা�
হার্শেল গিবস ও আন্দ্রে রাসেলের সঙ্গে আলোচনা করে ফিল্ডিং সাজাচ্ছেন খুলনার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কাল মিরপুরে
প্রথম আলো
টিকিটের দাম কমে যাওয়াটা হতে পারে বড় কারণ। তবে ধন্যবাদ পেতে পারেন ক্রিস গেইলও। প্রথম দিনেই বিপিএলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপনচিত্রটা তো তাঁর ব্যাটেই আঁকা! টি-টোয়েন্টির আকর্ষণ শক্তি প্রায় চুম্বক সমান হলো তাতেই। কাল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস আর খুলনা রয়েল বেঙ্গলের ম্যাচ পেল প্রায় ভরা গ্যালারি।
কিন্তু টি-টোয়েন্টিকে এদিন উৎসবের উপলক্ষ বানাতে পারল না কেউ। খুলনা রয়েল বেঙ্গল করল ৫ উইকেটে ১৭৫ রান। জবাবে ৭ উইকেটে ১৫৬ করে ১৯ রানে হেরেছে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস। ফলাফলই বলছে, টি-টোয়েন্টির রোমাঞ্চমঞ্চে নিতান্তই সাদামাটা এক প্রদর্শনী এটি।
বিপিএলে এখন পর্যন্ত বিদেশিদেরই দাপট। ব্যতিক্রম নয় এ ম্যাচটিও। রোমাঞ্চ কম থাকলেও খুলনার ১৭৫ রানে আন্দ্রে রাসেলের ১৫ বলে অপরাজিত ৩৭ তুলির একটা আঁচড়। পরে বল হাতে ৩৫ রানে ৪ উইকেট, ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারও উঠেছে রাসেলের হাতে। খেলা শেষে জ্যামাইকান এই অলরাউন্ডারের মুখে শুধু উপভোগের কথা, ‘এই কন্ডিশনেও টি-টোয়েন্টিটা উপভোগ করছি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৪ উইকেট পাওয়া অনেক বড় ব্যাপার।’ ৩৯ রানে ২ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ডোয়াইন স্মিথের সঙ্গে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ৭১ রানের তৃতীয় উইকেট জুটিটাই খুলনাকে দেয় বড় রানের ভিত। পাঁচ বাউন্ডারিতে ৩১ বলে ৪২।
সাকিব-স্মিথের দেওয়া ভিতের পর রাসেল-নাসির হোসেনের ২৭ বলে অবিচ্ছিন্ন ৫৯ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি। খুলনা ঢাকার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায় এতেই। ১২ বলে অপরাজিত ২২ রান নিলামে সবচেয়ে বেশি দাম ওঠা বাংলাদেশি ক্রিকেটার নাসির হোসেনের। ১ লাখ ১০ হাজার ডলারের সনাৎ জয়াসুরিয়া একাদশে না থাকলেও নাসির-রাসেলদের ‘ক্যামিও’ ইনিংসগুলো বুঝতে দেয়নি অভাবটা।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ দিয়ে খেলায় ফিরেছেন। কাল বিপিএল দিয়ে ফিরলেন অধিনায়কত্বেও। কিন্তু বিপিএল অধিনায়কত্বের শুরুটা ভালো হলো না ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের মাশরাফি বিন মুর্তজার। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে পাওয়া স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাবে সৃষ্ট অনাহূত আলোচনাটা আপাতত ভুলে থেকে মন দিতে চাইছেন খেলায়। কিন্তু কাল মাঠ ছাড়তে হয়েছে মন খারাপ করেই। ‘অল্প রানের ব্যবধানে দু-তিনটা উইকেট পড়ে যাওয়ায় সমস্যা হয়েছে। ওই সময়ে দেখে খেলা উচিত ছিল। বল হাতেও আমরা ১৫-২০ রান বেশি দিয়েছি’—ম্যাচ শেষে মাশরাফির হতাশা। তবে বল হাতে ২ ওভারের প্রথম স্পেলে ১৭ আর পরের এক ওভারে ১০ রান দিয়েও ভালো করার তৃপ্তি পাচ্ছেন তিনি। কে জানে, দর্শক হয়ে থাকলে হয়তো মাশরাফি কাল খুশি হতেন খুলনার জয়েও। বিপিএলের নিলাম পরিচয় ভুলিয়ে দিলেও বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে বরাবর খুলনার প্রাণভোমরাই তো ছিলেন!
১০ ওভারে ৮৩ রান তুলেই ৪ উইকেট হারানোর পর স্টিভেন্স (৩৮) ও পোলার্ডের (৩৯*) পঞ্চম উইকেট জুটিতে এসেছে ৬২, কিন্তু সেটার জন্য ৮.৩ ওভার খরচ হয়ে যাওয়াটা সময়ের দাবির চেয়ে একটু বেশিই ছিল। এই ‘অপচয়’ আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি ঢাকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
খুলনা রয়েল বেঙ্গল: ২০ ওভারে ১৭৫/৫ (সাকিব ৪২, রাসেল ৩৭*, স্মিথ ৩৭, নাসির ২২*, চন্দরপল ১৯, গিবস ১৪; আজহার ২/২০, মোশাররফ ১/২৭, সানি ১/৩৫, রানা নাভিদ ১/৪৫)।
ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস: ২০ ওভারে ১৫৬/৭ (পোলার্ড ৩৯*, স্টিভেন্স ৩৮, আজহার ২৮, নাজিমউদ্দিন ২১, নাজির ১৪; রাসেল ৪/৩৫, নাসির ১/২, সাকিব ১/২৫)।
ফল: খুলনা রয়েল বেঙ্গল ১৯ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আন্দ্রে রাসেল।
Ruby