শনিবার, ৩১ মার্চ, ২০১২

মুসলমানদের বোকা বানানোর এক হৃদয়বিদারক জঘন্য ইতিহাসের দিন ‘এপ্রিলফুল’

undefinedলেখক-মুহাম্মদ রুহুল আমিন সৌরভ :: নিজের ইতিহাস ভোলা মুসলমান জানে না এপ্রিল ফুল মুলতঃ কি ? মুসলমানদের সজাগ করতে কলম ধরেই পরিস্কার ভাষায় বলা যায় ইতিহাসের ঘুর্নাবর্তে এপ্রিল ফুল। এপ্রিল ইংরেজী বর্ষের চতুর্থ মাস। ফুল (Fool) অর্থ বোকা। শাব্দিক অর্থে এপ্রিল ফুলের অর্থ এসে দাড়ায়- এপ্রিলের বোকা। প্রতি বছর এপ্রিল মাস এলে পহেলা তারিখে সাত সকালে মানুষ একে অপরকে ধোকা দেয়। ধোকা প্রবনতা আর মানুষ ঠকানোর এই সংস্কৃতি দেখা যায় কিশোর-তরুন,যুবক,বয়োজেষ্ঠ সকলের মধ্যে। যেমন বাঙালী সংস্কৃতিতে আর ঠকামি হলো চৈতে চালাকী। চৈত্র মাস এলে তার প্রথম তারিখে এবং মাসের শেষ তারিখে একই ভাবে মানুষ একে অপরকে ধোকা দেয়ার প্রবণতা দেখা যায়। অথচ ইসলামে কাউকে ধোকা দেয়া হারাম করা হয়েছে। আল­vহ রববুল আলামিন বলেছেন, যারা ধোক দেয় তারা নিজেরা নিজেদের কে ধোকা দেয় কিন্তু তারা বোঝেনা- (বাকারা)বিশ্বনবী সঃ বলেছেন,‘‘যে ব্যক্তি ধোকা দেয়, সে আমার উম্মাত নয়।
বিজাতীয় সংস্কৃতিতে মত্ত হয়ে মুসলমানেরা বিধর্মীদের সাথে তালমিলিয়ে এপ্রিল ফুল সংস্কৃতি পালন করে;কিন্তু তারা জানেনা যে এদিনে মুসলমানদের জন্য হৃদয় বিদারক ঘটনার স্মৃতি জড়িয়ে আছে। এদিন মুসলমানদের করুন ইতিহাস যা সামনে এলে প্রকৃত মুমিনের গা শিউরে উঠবে। আল­vহ বলেছেন, নিশ্চয় মুমিন সে ব্যক্তি যার সামনে আল­vহর স্মরন হলে অন্তুর উদ্ধেলিত হবে (আনফাল-২)। আমাদের আজ জানতে হবে বুঝতে হবে। পহেলা এপ্রিল কি?
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ৯৮ হিজরী মোতাবেক ৭২২ খৃষ্টাব্দে মুসলিম সেনাপতি তারিক বিন জিয়াদ (রাঃ) সাত হাজার সৈন্য নিয়ে স্পেনের রাজা বড়াকির লক্ষাধিক সৈন্যকে শোচনীয় ভাবে পরাজিত করে স্পেন জয় করে তৎকালীন বিশ্বে মুসলিম সভ্যতার গোড়া পত্তন করেছিলেন। দীর্ঘ প্রায় আট’শ বছর মুসলমানদের এ গৌরবময় শাসন চলতে থাকে। বিজাতীর ভোগ-বিলাস ও নৈতিকতার অধঃপতনের ফলে ১৪৯২ খৃষ্টাব্দে ঐতিহাসিক এ মুসলিম শাসনে নেমে আসে কালো ছায়া। মুসলিম শাসনের গোড়ায় ধ্বস দেখা দেয়।
এ সুযোগ লুফে নিতে ভুল করেনি খৃষ্টান নেতা ফার্ডিনান্ড। তার চিন্তায় ধরা পড়ে এ সুবর্ণ সুযোগে যদি পরিনীজ পর্বতমালা অতিক্রমকারী দুধুর্ষ বিশ্ব শাসক মুসলিম বাহিনীকে হঠানো না যায় তবে ভবিষ্যতে ইউরোপীয় খৃষ্টানদের গীর্জার প্রতি অনিহা এসে যাবে। তারাও ক্রমান্বয়ে ঝুকে পড়বে মুসলিম ধর্মের দিকে। খৃষ্টান নেতা তার উদ্দেশ্য পুরনের নিমিত্তে পর্তুগীজ রানী ইসাবেলাকে বিয়ে করলো। বিয়ের পর থেকে সকল শক্তি একত্র করে মুসলিম বিরোধী যৌথ বাহিনী  নিয়ে স্পেন দখলের চেষ্টা করতে থাকে।
অবশেষে মুসলমানদের অবহেলা আর অসর্তকতার সুযোগে খৃষ্টান বাহিনী ঘিরে ফেললো স্পেনের তিন দিক। একদিকে ছিল শুধু মহা সুমুদ্র। এমনই নির্মম পরিস্থিতিতে সুযোগ নিলো খৃষ্টানদের সাথী হয়ে শত ঘষেটি বেগম আর মীর জাফরারা- যারা স্বজাতির গলায় ছুরি মেরে নির্মান করতে চেয়েছে শান্তির নীড়। নামধারী মুসলামানদের সীমাহীন গাদ্দারীকে পুজি করে খৃষ্টানরা অবতীর্ণ যমদুতের ভুমিকায়। যার ফলে মরণপন চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়ে চিরতরে পরাজিত হলো বিশ্ব বিজয়ী সিংহ সাবক মুসলিম জাতি। বিপর্যস্ত মুসলমানদের এহেন অবস্থায় প্রতারক কাপুরুষ ফার্ডিনান্ড তার প্রতারণার ফাদে ফেলে মুসলমানদের সমুলে নিঃশেষ করে দেয়। মুসলমানদের অভয় দিয়ে অস্ত্র পরিত্যাগ করে মসজিদে আশ্রয়ের আহবান জানায়। এবং ঘোষনা করে যে, যারা মসজিদে আশ্রয় নিবে তাদের জীবনে বেচে থাকার নিরাপত্তা দেয় হবে। মুসলমান আবারো বোকার পরিচয় দিয়ে প্রতারকের কথা অনুযায়ী  আশ্রয় নিলো মসজিদে। যেমনটি আজকের একশ্রেনীর মুসলমান ইয়াহুদি আর খৃষ্টানদের দালালী করতে মসজিদে আশ্রয় নিতে মুসলমানদের কে উদ্বুদ্ধ করছে। যাহোক নৈরাজ্যের অমানিশায় সরলপ্রান মুসলমানরা যেই আশ্রয় নিলো স্পেনের রাজধানী কর্ডোভার মসজিদ সহ বিভিন্ন মসজিদে মুহুর্তের মধ্যে লাখ লাখ মুসলমান আবাল-বৃদ্ধ আর নিষ্পাপ শিশুদের কে নরপিশাচ প্রতারক রাজা ফার্ডিনান্ড তালা লাগিয়ে দিলো মসজিদ গুলোতে। এর পর বিশ্বমানবতা কে পদদলিত করে হায়েনার চেয়ে হিংস্র শিয়াল অপেক্ষা ধুর্ত মানুষ নামের রক্তপিপাসু পশুগুলো আগুন লাগিয়ে মসজিদে আশ্রয় নেয়া মুসলমানদেরকে হত্যা করলো।  নারী পুরুষ আর শিষ্পাপ শিশুদের আর্তচিৎকার আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠলো স্পেনের আকাশ-বাতাস। দেখতে দেখতে ভষ্ম হয়ে গেল অসংখ্য তাজা প্রাণ। আর সাথে সাথে সমাপ্তি ঘটলো আট’ শ বছরের মুসলিম শাসনের ইতিহাস। আর সাথে সাথে নিষ্টুর ঠক রাজা ফার্ডিন্যান্ড খুশিতে আত্মহারা হয়ে পার্টি দিলো এবং রং তামাশার মধ্যে স্ত্রী ইসাবেলাকে জড়িয়ে ধরে ড্যান্স করেছিল আর চিৎকার করে বলেছিল হায় মুসলিম! তোর এত বোকা! তোদের বোকামীর সাজা দিলাম তোর স্বজাতি আর তোদের অস্তিত্ব ভুলে যাওয়ার সুযোগে। খতম করলাম মুসলিম শাসনের অধ্যায় কে। জয় হোক খৃষ্টান মিশনারিজ।
হৃদয় বিদারক এ ঘটনার দিন ছিল পহেলা এপ্রিল ১৪৯২সাল। সেদিন থেকে মুসলমানদের ধোকা দেয়ার সেই ইতিহাস স্মরনার্থে খৃষ্টানরা  প্রতিবছর ১লা এপ্রিল পালন করে ‘‘এপ্রিল ফুল’’।
কপালপোড়া মুসলমান নিজেদের বিরুদ্ধে এমন লোমহর্ষক মর্মান্তিক ঘটনা সম্পর্কে অবহিত না হয়ে নিজের ইতিহাস ভুলে যাওয়ার কারণে ভ্রান্তির বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে পাগলের মত ঘুরছে। দুর্ভাগ্যকে আজ আনন্দের খোরাক বানিয়ে খৃষ্টানদের ভালবাসার ফাঁদে পড়ে এপ্রিল ফুল পালন করছি। তাও আবার দেশব্যাপি পালনের জন্য দেশবাসীকে বিভিন্ন পর্যায়ে উদ্বুদ্ধ করছি। এখনো সময় থাকতে সাবধান হই,ইতিহাস জানতে চেষ্টা করি মুসলমান সিংহের জাতি,মুসলমান বিজয়ী জাতি বুঝার চেষ্টা করি। ইসলাম বিরোধী সকল অপকর্ম ও বিজাতীয় অপসংস্কৃতি পরিহার করি। মুসলিম সংস্কৃতি তুলে ধরি আবারো মাথা উচু করে দাঁড়ায়। কোরানের কাছে ফিরে আসি নতুবা পরিণতি হবে ভয়াবহ। আল­vহ আমাদের মাফ করুন, ইসলাম বুঝার আমাদের কে তৌফিক দিন আমীন।
উপস্থাপকঃ
সাংবাদিক, গবেষক, লেখক, ইসলামী চিন্তবিদ
কালীগঞ্জ,ঝিনাইদহ
০১৭১২-৬১২৮৭৬,০১৯১৯-৬১২৮৭৬
Ruby