শুক্রবার, ২৩ মার্চ, ২০১২

খালেদা জিয়ার জনসভার আড়াই মাস পর একই স্থানে ভাষণ দিবেন শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে ১৪ দলের সমাবেশে বিএনপির চেয়ে বেশী লোক সমাগম ঘটাতে চায় আওয়ামীলীগ

জীবন কৃষ্ণদেবানথ, চট্টগ্রাম ব্যুরো :: চট্টগ্রাম নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে আসন্ন ১৪ দলের মহাসমাবেশে চারদলীয় জোটের সমাবেশ থেকে বেশী লোক সমাগম ঘটাতে তৎপর হয়ে উঠেছে নগর ও জেলা আওয়ামীলীগ।এর আগে বিগত আড়াই মাস আগে গত ৯ জানুয়ারি একই স্থানে মহাসমাবেশ করেছে চারদলীয় জোট। লাখ লাখ মানুষের ওই মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এবার একই স্থানে আগামী ২৮ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চার দলীয় জোটের সাথে চ্যালেঞ্জের অংশ হিসেবে আসন্ন মহাসমাবেশকে  লোকে লোকারণ্য এবং স্মরণকালের সর্ববৃহৎ করতে  বিরামহীনভাবে ছুটে চলছেন নেতারা। এরই ধারাবহিকতায় আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গসংগঠনগুলো জোরে সোরে মাঠে নামায় গতি সঞ্চার হতে চলেছে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমও। একই সাথে জেলাগুলোতেও চলছে ব্যাপক প্রস্ততি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে বিএনপি-জামায়াতের সকল ষড়যন্ত্র রুখতে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আগামী ২৮ মার্চ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে ২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুর উদ্বোধন করতে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলীর দক্ষিণ তীরে সিডিএ আবাসিক এলাকার মাঠে জনসভা করেছিলেন। এর ১৮ মাস পর পলোগ্রাউন্ডের মাঠে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন বলে জানা গেছে। এছাড়া তিনি ওই দিন চট্টগ্রামের ৫টি উন্নয়ন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করবেন।এদিকে আসন্ন মহাসমাবেশ সর্বকালের সর্ববৃহৎ হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহীর কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমনে নেতাকর্মীদের সাথে সাথে সাধারণ মানুষের মাঝেও প্রাণচঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে। গত ৩ বছরে চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতাকে চট্টগ্রামবাসী চিরদিন মনে রাখবেন উল্লেখ করে আমিনুল ইসলাম বলেন চট্টগ্রামবাসীর প্রতি শেখ হাসিনার আন্তরিকতা অতীতে বিভিন্ন কর্মকান্ডে প্রতিফলিত হয়েছে। তাই ওই জনসভাকে উৎসবমূখর করে তুলেতে সাধারণ মানুষের মাঝেও উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী মহাসমাবেশ সফল করতে চট্টগ্রাম জুড়ে চলছে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা আওয়ামীলীগ। প্রচার-প্রচারণায় পিছিয়ে নেই উপজেলা এবং ইউনিয়নগুলোও।নগরীর ওয়ার্ড থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ে ইউনিয়ন পর্যন্ত সবর্ত্র মাইকিং, পোস্টার, লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। নগরী ও জেলার অলিগলি ছেয়ে গেছে মহাসমাবেশের পোস্টার-ব্যানারে। মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা বেশ কয়েকদিন আগ থেকে চট্টগ্রামে অবস্থান করে প্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করছেন। নগরীর ছোট-বড় প্রায় সব বিলবোর্ডেই এখন শোভা পাচ্ছে মহাসমাবেশের অসংখ্য ডিজিটাল ব্যানার। প্রধানমন্ত্রীর ছবির পাশাপাশি স্থানীয় মন্ত্রী-এমপি এবং শীর্ষ নেতৃবৃন্দ নিজেদের ছবিসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বিশাল আকৃতির দৃষ্টিনন্দন বিল বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। নগর ও জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের অনেকেই নিজেদের তুলে ধরার মোক্ষম সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে ওইসব সাইন বোর্ড , ব্যানারে। এর আগে গত ১৫ মার্চ দুপুর থেকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে নগরীতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর  চট্টগ্রাম সফরকে কেন্দ্র করে সিটি কর্পোরেশন নগরকে চকচকে তকতকে রাখার লক্ষে ব্যাপক পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সিটি কর্পোরেশন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও আর্বজনা এবং নগর অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এ বিষয়ে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, যে কোনো মূল্যে প্রধানমন্ত্রীর মহাসমাবেশ সফল করতে এখন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রস্তুতি সভা থেকে শুরু করে ট্রাকে করে পথসভাসহ সকল ধরণের প্রচারণা চলছে।

জানা গেছে, চট্টগ্রামের তিনটি সাংগঠনিক জেলা কমিটির পাশাপাশি রাঙামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার, ফেনী, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ যোগ দেবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। এদিকে দলের নেতারা মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও জনগনকে সাথে নিয়ে ওইদিন পলোগ্রাউণ্ড মাঠকে জনসমূদ্রে পরিণত করার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিভিন্ন প্রস্তুতি সভায়। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাংসদ আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু বলেন, এ মহাসমাবেশ হবে স্মরণকালের বৃহত্তম মহাসমাবেশ। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, নেত্রীর

(শেখ হাসিনা)  ইচ্ছা তিনি পলোগ্রাউন্ডে মহাসমাবেশ করবেন। সে জন্য আমরা ২৮ মার্চ পলোগ্রাউন্ডেই মহাসমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। পলোগ্রাউন্ডে এদিন আমরা দশ লাখ মানুষের জনসমুদ্র রচনা করব।এদিকে মহাসমাবেশকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, জেলা পরিষদের প্রশাসক এমএ সালাম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মহাসমাবেশ সফল করার জন্য উত্তর, দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের উদ্যোগে ইতোমধ্যে আমরা বেশ কয়েকবার প্রস্তুতি সভা করছি। উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রচারণা চলছে।
Ruby