সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১১

দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি নানা মূখি প্রযূক্তির উন্নয়ন, অথচ আর্থিক সমস্যার জন্য থমকে যেতে হচ্ছে শাইনকে

বাঘা নিউজ ডটকম, এস.এম সেলিম আহম্মেদ ভান্ডারী ৫ ডিসেম্বর: ডিজিটাল বাংলাদেশ। কথাটি খুব পরিচিত। সত্যিই এখন বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে বিভিন্ন প্রযুক্তির ছোঁয়া। খুব সহজেই একজন মানুষ জেনে নিতে পারছে তার দৈনন্দিন কর্মকান্ডের বিস্তারিত বিবরণ। এখন কেউ ইচেছ করলে নিমেষেই বিশ্বের যে কোন প্রান্তে যোগাযোগ ও তথ্য আদান-প্রদান করতে পারছে। সেই সাথে বেড়েছে সাধারন জীবন যাত্রার মান। কিন্তু আসলেই কি বাংলাদেশের প্রেক্ষপট আজ থেকে দশ বছর আগে এমনটি ছিল?

সেই নম্বই দশকের কথা, তখনো দেশে তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়া কেবল শহর কেন্দ্রিক। প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে বেহাল অবস্থা এতটাই দুরূহ ছিল যে, কোন তথ্য জানতে হলে বিভিন্ন শিক্ষিত জনের সরানাপন্ন হতে হত। তেমনই একটি গ্রামের  নাম রাজশাহীর বাঘা থানার অন্তর্গত মণিগ্রাম ইউনিয়ন। সেখানে সাধারণ জীবন-যাপন কারী মানুষদের ভিড়ে বেড়ে উঠেছিল “শাইন” নামের এই কিশোর ছেলেটি। তার পুরো নাম- মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান (শাইন), বাবা- মোঃ মখলেসুর রহমান একজন ছোট মুদি ব্যাবসায়ী। দুই ভায়ের মধ্যে সেই বড়। অত্যান্ত দরিদ্র ঘরে জন্ম নেয়া এই কিশোর ছেলেটি ছোট বেলা থেকেই প্রযূক্তিগত দিকগুলোতে ছিল ভিষন মনোযোগি। নানা রকম প্রযূক্তি তাকে বিভিন্ন ভাবে আর্কিষ্ট করত। সাধ্যের মধ্যে না থাকাই সেই চিন্তার গন্ডিকে স্বপ্নের মধ্যই সীমাবদ্ধ করে রাখত এই  প্রযুক্তিপ্রেমি অবুঝ বালকটি। এলাকার বিভিন্ন প্রযূক্তিগত সমস্যা সমাধানের কান্ডারী এই ছেলেটি প্রতিনিয়ত প্রযুক্তি খাতে রাখছে বিশেষ অবদান। সে হার্ডওয়ার ও সফট্ওয়ারের উপর দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি নানা মূখি প্রযূক্তি উন্নয়ন, কম্পিউটার প্রশিক্ষন, ওয়েব পেজ ডেভলপমেন্ট, আউট সোর্সিং কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। কম্পিউটার, মোবাইল, ইন্টারনেট পারদর্শীতায় মুগ্ধ এলাকাবাসির পক্ষে “বাণী এন্টার প্রইজের” প্রোপাইটার মোঃ আরিফুজ্জামান জানান, “শাইন ছাড়া কম্পিউটারের কথা চিন্তাই করা যায় না, বিভিন্ন সমস্যায় তাকে কাছে পাওয়া যায় সব সময়। এই রকম প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রযূক্তির আলো ছড়িয়ে দিতে সদা উদ্যমি এই “প্রযূক্তি-বালক” মোস্তাফিজুর রহমান (শাইন) ”।

রাজশাহী বাংলাদেশ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের কম্পিউটার বিভাগে অধ্যায়নরত এই কিশোর ছেলেটির বিভিন্ন সময় সাংসারিক টানা-পোড়নে লেখা-পড়া প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে যেতে থাকে। তবুও সে নিজের  মনোবলকে অটুট রেখেছে সব সময়। মমতাময়ী মায়ের অনুপ্রেরণায় সে অবলীলায় পার করেছে সবরকম বাধা। তবুও এখনো তাকে আর্থিক সমস্যার জন্য থমকে যেতে হয় প্রতিনিয়ত। তার সাথে কথা বলে জানা গেল যে, টাকার অভাবে সে তার জীবনের সব চেয়ে বড় স্বপ্ন- একটি “কম্পিউটার” এখনো কিনতে পারেনি। কথাটি বলতে দু’গাল বেয়ে অশ্র“র ফোটা তার ভেতরের জমানো কষ্টের কথাই জানান দিচ্ছিলো। বিভিন্ন মানুষের দুয়ারে প্রযূক্তির আলো ছড়িয়ে দিলেও এখনো তার নিজের ঘর অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছে। একটি কম্পিউটার তার প্রযূক্তি বিষয়ক মেধাকে বিকোশিত করার প্রথম অন্তরায়। তাই সে শিক্ষা মন্ত্রানলয় সহ দেশের শিক্ষানুরাগি মহলের নিকট সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। আমরা আশা করি এই শাইন একদিন বাংলাদেশের আই,সি,টি-তেও Shine করবে। বিশ্ব দরবারে সমুজ্জল করবে বাংলাদেশের মুখ।
Ruby