বাঘা নিউজ ডটকম, বিজয় ঘোষ/নাজিম হাসান, ৭ ডিসেম্বর : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় কৃষকদের মাঝে পান চাষের আগ্রহ বাড়ছে। পান চাষ লাভজনক হওয়ায় বাগমারার প্রতিটি ইউনিয়নেই নতুন নতুন পান বরজ তৈরী করছে কৃষকরা। অন্যান্য আবাদের চেয়ে পান বরজে তুলনামূলক লাভ বেশী হওয়ায় তারা পান চাষে ঝুঁকছেন বলে কৃষকরা জানান।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাগমারায় ৬২০ হেক্টর জমিতে পান চাষ করা হচ্ছে। ১৬টি ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভা এলাকায় ৮৮৭২টি পান বরজ রয়েছে। পান কেনা-বেচায় রয়েছে কয়েকটি হাট। সেগুলোর মধ্যে তাহেরপুর, মোহনগঞ্জ, মাদারীগঞ্জ, মচমইল, আলোকনগর ও শিকদারী উল্লেখযোগ্য। রাজশাহীর অন্যতম হাট তাহেরপুর থেকে প্রতি সপ্তায় ১৫/২০ ট্রাক পান দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়ে থাকে বলে ব্যসায়ীরা জানান। তুলনা মুলক কম খরচে গড়ে তোলা পান বরজে যথেষ্ট যতœ নিতে হয় বলে কৃষকরা জানান। প্রথম দিকে শাড়ক, লগর, বাতা, খড়, ছাটন, ওয়াশি ও পাটখড়িসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে আবৃত করতে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়। অন্যান্য মাসের তুলনায় আষাঢ়- শ্রাবন মাসে বেশী পরিমানে পান পাওয়া যায়। বাগমারার পান দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখন বিদেশে রপ্তানী করা হচ্ছে বলে জানা গেছে । গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের সেনপাড়া গ্রামের পানচাষী সাইফুল জানান, বাগমারার পান দেশের অন্যান্য স্থানের চেয়ে সুস্বাদু বলে এই এলাকার পানের চাহিদা অনেক বেশী। রাজশাহীর পান সৌদিআরবে রপ্তানি হয় বলে জানা গেছে। এছাড়াও বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুরসহ উত্তরের অনেক জেলায় বাগমারার পান বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে এক পোয়া (৩২ বিড়া) পানের দাম দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা । খুচরা বাজারে এক বিড়া (১৬ গুন্ডা অর্থাৎ ৬৪টি) পান ৮০/৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে পলাশী গ্রামের পানচাষী প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান। পান চাষে নিদিৃষ্ট কোন সময় না থাকায় সারা বছরই তা বাজারে বিক্রি করা যায়। অন্যান্য ফসলে নানা কারনে উৎপাদন খরচ না ওঠায় আর্থিক ক্ষতি দেখা দিলেও পানচাষে কৃষকরা তেমন কোন আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন না বলে জানান সেনপাড়া গ্রামের হরিশচন্দ্র, গোপালসহ অনেকেই। তবে ওই গ্রামের রোউল ইসলাম বলেন, পান বরজে অধিক পরিশ্রম করতে হয়। উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের সগুনা, কামনগর, দ্বীপনগর, বালানগর, মোহাম্মাদপুর, শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বাইগাছা, বুজরুক কৌড়, আমিন কৌড়, বুজরুককুলা, গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের কনোপাড়া, সাজুড়িয়া, শিবজাইট, বাজে গোয়ালকান্দি, তেলিপুকুর, পলাশী. সেনপাড়া, গাঙ্গোপাড়া, রামরামা, ভবানীগঞ্জ পৌরসভার কর্ণিপাড়া, হাজরাপাড়া, হামিরকুৎসা ইউনিয়নের আলোকনগর, মাড়িয়া ইউনিয়নের কালাপাড়াসহ উপজেলার অনেক গ্রামে কৃষকরা পান চাষে আগ্রহী হয়ে নতুন পান বরজ নির্মাণ করছেন। শিবজাইট গ্রামের আশরাফ জানান, এলাকায় পানচাষীদের লাভ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে নতুন পান বরজ করেছি। কনোপাড়া গ্রামের আব্দুল জব্বার, বাইগাছা গ্রামের আব্দুর রহমান, কনোপাড়া গ্রামের আব্দুল জব্বারসহ নতুন পানচাষীরা অধিক লাভে আশায় পান বরজ নির্মাণ করেছেন বলে জানান।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, পান চাষে অধিক লাভ হওয়ায় কৃষকরা পান চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠছে। বাগমারায় গত বছরের তুলনায় পান চাষের জমির পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, পান চাষে অধিক লাভ হওয়ায় কৃষকরা পান চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠছে। বাগমারায় গত বছরের তুলনায় পান চাষের জমির পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে।
