শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১২

নাটোরের সিংড়ায় স্কুল শিক্ষকের পাকা ধান জমিতেই পড়ে আছে

বাঘা নিউজ ডটকম, আকতার হোসেন অপূর্ব, নাটোর প্রতিনিধি :: নাটোরের সিংড়া উপজেলার রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের সোয়াইড় বিলে প্রভাবশালীদের দাপটে শিক্ষক আঃ হামিদ ৯২শতাংশ জমির পাকা ধান কাটতে পারছে না। রোপণকৃত পাইজাম ধান জমিতেই ঝরে পড়ছে। অসহায় ঐপরিবার আইনের আশ্রয় নিলেও সিংড়া থানা পুলিশ এই প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। ফলে অভিযুক্তরাই উৎসাহিত হয়ে পাল্টা তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এতে মহাবিপাকে পড়েছে শিক্ষক পরিবারটি।
এলাকাবাসী জানায়, সিংড়া উপজেলার গোয়ালবাড়িয়া গ্রামের আজগর আলী আকন্দের কাছ থেকে পৈত্রিক সূত্রে তার মেয়ে মোছাঃ ঝরনা খাতুন প্রায় ত্রিশ বছর আগে জমির মালিকানা পায়। তারপর থেকে ঝরনা খাতুন এবং তার স্বামী স্কুল শিক্ষক আব্দুল হামিদ জমিটি ভোগ দখল করে আসছিলো। সম্প্রতি একই গ্রামের মৃত: আজিমুদ্দিনের পুত্র রফিক আকন্দ’র নেতৃত্বে কয়েকজন জাল দলিল করে ঐ সম্পত্তি দখলে মড়িয়া হয়ে উঠে। এর আগে গত বছরের ২মে রোপণকৃত ইরি বোরো ধান তারা জোর করে কেটে নেয়। এ ব্যাপারে স্কুল শিক্ষক আঃ হামিদ তাদের বিরুদ্ধে নাটোর আমলী আদালতে একটি অভিযোগ দাখিল করে। এবিষয়ে একাধিক তদন্ত রিপোর্টে আসামীদের দলিল জাল এবং ঝরনা খাতুনের কাগজপত্র সঠিক, খাজনা খারিজ ও ডি সি আর প্রাপ্ত বলে প্রমানিত হয়। এরপরও চলতি আমন মৌসুমের রোপন করা পাইজাম ধান ঐ প্রভাবশালীদের দাপটে কাটতে পারছে না। ধান কাটার মেয়াদ অনেক আগে শেষ হয়ে গেলেও ঐ ধানের অবস্থান এখনো জমিতেই। না কাটার ফলে শীষ থেকে ধান ঝরে ঝরে মাটিতে পড়ছে। চারা রোপন থেকে শুরু করে পরিচর্যার মাধ্যমে ধানের পূর্নতা আনলেও ঘরে তুলতে না পারার কষ্টে  ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষক পরিবারটি বিমর্ষ হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সাংবাদিকরা সরেজমিনে জমিতে গেলে একই এলাকার অধিবাসী কৃষক আকরাম হোসেন, রুস্তম আলী ও শাহিন জানায়, জমি নিয়ে ঝামেলা রয়েছে। তাই ধান কাটতে দিচ্ছে না, জমিতেই পাকা ধান ঝরে পড়ছে। আর রফিক আকন্দ’র সাথে প্রভাবশালী এবং খারাপ লোকের যোগাযোগ রয়েছে। তাই ভয়ে কেউ কথা বলতে পারে না।
ক্ষতিগ্রস্থ স্কুল শিক্ষক আঃ হামিদ জানান, প্রভাবশালী ঐসন্ত্রাসীদের ভয়ে জমির পাকা ধান কাটতে পারছি না। সিংড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আসামীরা আমাকে  বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।
সিংড়া থানার এএসআই আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে ঐ প্রভাবশালীরা শিক্ষককে হুমকি ধামকি দেয়ারও প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গত ৭ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। আদালত ইতোমধ্যে গ্রেফতারী পরোয়ানাও জারি করেছে। তার পরও কেন ধান কাটতে দিচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে আর  কিছুই বলতে পারবেন না বলে জানান।
তবে এলাকাবাসী বলেছে, আসামী গোয়ালবাড়িয়া গ্রামের মৃত: আজিমুদ্দিনের ছেলে রফিক আকন্দ, রহেদ, শহিদুল ইসলাম, রফিকের ছেলে মিল্টন ও একই গ্রামের মৃত: জসিম সরকারের ছেলে নাহিদ হোসেন এর বিরুদ্ধে নাটোর আমলী আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করলেও পুলিশ কোন অজ্ঞাত কারণে আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
Ruby