,বদরুল ইসলাম মাসুদ, বান্দরবান থেকে :: অবশেষে বান্দরবানের দুর্গম এম্পুপাড়াবাসী পরিশোধিত পদ্ধতিতে বিশুদ্ধ পানির স্বাদ পেয়েছে। এখন আদিবাসী ম্রো জনগোষ্ঠীর কয়েকশত মানুষ বিশুদ্ধ সুপেয় পানি পাওয়ায় তাদের মধ্যে অপরিসীম আনন্দ আর প্রাপ্তির উলস্নাস। পিছিয়ে পড়া আদিবাসী ম্রো জনগোষ্ঠীর অর্ধশতাধিক পরিবার এখন থেকে গ্রেভিটি ফ্লো সিস্টেম (জিএফএস) প্রদ্ধতিতে পাহাড় থেকে বিশুদ্ধ পানি পরিশোধনের পর পান ও ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছে। আর এই কাজটি করা হয়েছে ইউনিসেফের সহযোগিতায়। স্থানীয় এনজিওা গ্রীণহিল এই প্রকল্প বাসত্মবায়ন করেছে।
গত ২২ জানুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) ও স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর এই বিশুদ্ধ পানি (জিএফএস) প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এসময় দুর্গম এম্পুপাড়াবাসীর মধ্যে আনন্দ আর পাওয়ার সুখ অন্যরকম পরিবেশ সৃষ্ঠি করে। এ উপলক্ষে এম্পুপাড়ায় এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় টংকাবতী ইউপি চেয়ারম্যান পূর্ণচন্দ্র ম্রো-&এর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুছ, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জামান, গ্রীণহিল এনজিও’র নির্বাহী পরিচালক মংথোয়াইচিং, স্থানীয় বাসিন্দা ইংরো ম্রো, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলী।
জানা গেছে, ইউনিসেফের সহযোগিতায় ১২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা ব্যয়ে গ্রীণহিল এনজিও এই জিএফএস প্রকল্প বাসত্মবায়ন করে। পাহাড় থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূর থেকে পানি সংগ্রহ করে একটি নির্দিষ্ট স্থানে নির্মিত ট্যাঙ্কিতে পানি মওজুদ করা হয়। সেখান থেকে টেপ এর মাধ্যমে লোকজন পানি খাওয়াসহ ব্যবহারের জন্য নিয়ে থাকে। বান্দরবান-থানচি সড়কের প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দূরে দুর্গম ম্রো আদিবাসী অধ্যূষিত এম্পুপাড়ায় এই প্রকল্প বাসত্মবায়নের ফলে পাড়ার ৬৮ পরিবারের কয়েকশত মানুষ বিশুদ্ধ পানি পাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এর আগে স্থানীয় লোকজন পাহাড়ের ছড়া ও গর্ত থেকে বিশেষ করে খাবারের পানীয় জল সংগ্রহ করতো। এতে তাদের প্রচুর সময় লেগে যেত। এছাড়া রান্না-বান্নার কাজের পানি তারা অনেক দূরের নদী, ঝিড়ি, ছড়া থেকে পানি নিয়ে আসত। অনেক দূর পথ পাড়ি দিয়ে তাদের গোসল করতে যেতে হত। এই দূরবস্থার কথা বিবেচনা করে দুর্গম এই পাড়ায় জিএফএস পদ্ধতির মাধ্যমে পানি মওজুদ করায় স্থানীয় লোকজন এখন এই পানি খাওয়া, রান্না-বান্নাসহ নিত্য ব্যবহার্য কাজে ব্যবহার করতে পারবে।