শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

তানোরে কেবল টিভিতে অবৈধ চ্যানেল ও বিজ্ঞাপন প্রচার

undefinedআলিফ হোসেন, তানোর থেকে :: রাজশাহীর তানোরে একটি কেবল টিভি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে অবৈধ চ্যানেল ও বিজ্ঞাপন প্রচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার জনস্বার্থে এলাকাবাসীর পক্ষে আব্দুস সবুর বাদি হয়ে তথ্যমন্ত্রণালয় বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে প্রকাশ তানোরে সরকারি নীতিমালা ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই বরেন্দ্র ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক নামের একাধিক ক্যাবল অপারেটর নিজস্ব চ্যানেলের সম্প্রচার ও এসব চ্যানেলে নিয়মবর্হিভূতভাবে সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তারা বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপনও সম্প্র্রচার করছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এক শ্রেণীর কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশ করে দীর্ঘদিন ধরে তারা অবৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্যর বিজ্ঞাপন প্রচার করে আসছেন। অথচ সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি না দেখার ভান করে এড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে সরকার প্রতিনিয়ত বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হলেও এসব কর্মকর্তা ও ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কের মালিকদের পকেট ভারী হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তানোরের অধিকাংশ ডিস চ্যানেলে অনুমোদিত স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর মতোই নির্দিষ্ট নাম, লোগো এমনকি অনুষ্ঠান সূচি অনুসারে সম্প্রচার চলছে। অধিকাংশ চ্যানেলে ২৪ ঘন্টাই নানা ধরনের অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়। এসব অবৈধ চ্যানেলে নির্বাচিত নাটক, গান ও নতুন-পুরুনো দেশি-বিদেশি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচিত্র প্রচার করা হয়। এ ছাড়াও অনেক সময় গভীর রাতে বিভিন্ন ধরনের অশ্লিল ও আপত্তিকর ছবিও প্রদর্শন করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে ভিডিও চ্যানেলগুলোতে অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিউটি পার্লার, কোচিং সেন্টার, ক্লিনিক, ডাক্তার, হাকিম-কবিরাজ, হারবাল যৌন চিকিৎসা, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাসহ ছোট বড় নানা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এরা আইনশৃংখলা বাহিনীর চোখে ধূলো দিতে বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি অনেক সময় বিভিন্ন জনসচেতনামুলক বিজ্ঞাপনও প্রচার করে থাকেন। অথচ নিয়ম হচ্ছে ক্যাবল টিভিতে শুধুমাত্র জনসচেতনামুলক বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে। কোন অবস্থাতেই বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না। কিন্তুু তানোরে দীর্ঘদিন ধরে নিয়মবহির্ভূতভাবে ডিস এ্যান্টেনাগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে নানা ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। আর অল্প পুঁজিতে অধিক মুনাফা হওয়ায় এই অবৈধ ব্যবসার প্রতি ঝুঁকছেন উঠতি বয়সের যুবকরা। নেপথ্যে থেকে এসব ব্যবসায় সহযোগীতা করছেন এলাকার রাজনৈতিক পরিচয়ের একশ্রেণীর প্রভাবশালী ও জনপ্রতিনিধিরা।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ফ্রিকুয়েন্সি ডিক্লারেশন এক্ট ও কেবল টিভি নেটওয়ার্ক সম্প্রচার আইন-২০০৯ অনুযায়ী, ডিস প্রযুক্তির মাধ্যমে আঞ্চলিক টিভি চ্যানেল বা ডিস চ্যানেল প্রতিষ্ঠা সম্পূর্ণ বেআইনি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ধরনের বেআইনি চ্যানেল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অনুষ্ঠানমালা ও বিজ্ঞাপন প্রচার করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারণে এসব অবৈধ টিভি চ্যানেল স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। এ ব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী জিয়াউল বাসেত বলেন তিনি এবিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাননি, তবে, তিনি বিষয়টি বিস্তারিত খোঁজ-খবর নিয়ে দেখবেন। তিনি বলেন, নীতিমালা না মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করা হলে তথ্য মন্ত্রণালয়ে লিখিত দেয়া হবে। এ ব্যাপারে তানোর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন তিনি কোন ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাননি। তিনি বলেন বিষয়টি বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে তানোর বরেন্দ্র কেবল টিভি নেটওয়ার্কের স্বত্ত্বাধিকারী মিজানুর রহমান (মিজান) এমন অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, সারা দেশে যেভাবে কেবল টিভি নেটওয়ার্ক ব্যবসা পরিচালনা করছেন, সেভাবে তিনিও তাদের মতোই ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
Ruby