বুধবার, ২৮ মার্চ, ২০১২

বান্দরবানে তামাকের পরিবর্তে তরমুজ চাষ।

মোঃ নজরুল ইসলাম (টিটু), বান্দরবান :: বান্দরবান থানার আলীকদম উপজেলায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। মাতামুহুরী নদীর পাড়ে তামকের পরিবর্তে চাষ করা দেশি জাতের তরমুজের ফলন হয়েছে। প্রতিদিনই নৌকাযোগে উজান থেকে আলীকদম বাজারে আনা হচ্ছে তরমুজ।
জানাগেছে, প্রতি বছর এইসব রিজার্ভ জমিতে চাষ করা হত তামাক। কিন্তু এই বছর বন বিভাগের কঠোর নজরদারিতে চাষীরা তামাক চাষ করতে পারেনি। ফলে তামাকের ভয়াল গ্রাস থেকে রক্ষা পেয়েছে প্রায় একশ হাজার একর জমি। এইসব জমিতে তরমুজ চাষ করে ব্যাপক ফলন হওয়ায় চাষীদের মধ্যে আশার আলো দেখা দিয়েছে।
মাতামুহুরীর রিজার্ভ এলাকায় প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে তামাকের পরিবর্তে তরমুজ চাষ করেছে বলে জানিয়েছেন চাষী রহিম, সোলাইমান, অংশৈনুসহ কতিপয় কৃষক। তারা আরো বলেন, বিগত ১৮-২০ বছর ধরে এইসব রিজার্ভ এলাকায় তামাক চাষ হয়ে আসছিল। কিন্তু লামা বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা হারুন-অর রশিদের নেতৃত্বে কয়েকবার অভিযান চালিয়ে তামাকের জমি ধ্বংস করে দেয়া হয়। ফলে চাষীরা এই বছর পরীক্ষা মূলক ভাবে তরমুজ চাষ করে। তারা বলেন, এইবছর ভাল তরমুজ হয়েছে। প্রায় ২ কোটি টাকার তরমুজ এই বছর বিক্রয় করা সম্ভব হবে বলে তারা আশা করছেন। তারা বলেন, পরবর্তীতে সরকারের সহযোগিতা পেলে আর কখনোই তারা তামাক চাষ করবেনা।
রিজার্ভ এলাকার চাষী সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারী জানিয়েছেন, মাতামুহুরী নদীর পাড়ে তরমুজ ভাল ফলন হয়। কিন্তু সরকারী কোন আর্থিক সহযোগিতা না থাকায় গরীব কৃষকরা তামাক চাষে প্রলুব্ধ হচ্ছে। রিজার্ভ এলাকার বাইরেও তরমুজের ফলন ভাল হয়েছে। প্রতিটি তরমুজ ৫০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। যা তামাকের চেয়ে অধিক লাভ জনক। তাছাড়া প্রতিদিন ট্রাকযোগে চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ সারাবাংলাদেশে সরবরাহ করা হচ্ছে।
সূত্রে জানাগেছে, তামাক চাষের জন্য ট্যোবাকো কর্তৃপক্ষ কৃষকদের প্রয়োজনীয় বীজ, সার, কীটনাশক, পানি সেচের জন্য পাম্পসহ যাবতীয় খরচের টাকা প্রদান করে থাকে। এমনকি তামাক উৎপাদনের পর ট্যোবাকো কোম্পানী আবার নির্ধারিত মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে সেই তামাক ক্রয় করে থাকে, যা আর কোন সংস্থা কৃষকদের এই সুবিধা দেয়না।
যদি সরকারী ভাবে কোন ধরনের আর্থিক সহযোগিতা পাওয়া যায় তবে আগামী দিনে তামাকের মতই চাষীরা অন্যান্যে ফসল চাষে আগ্রহী হবে বলে আশা করছেন এলাকার সচেতন মহল।##
Ruby