আকতার হোসেন অপূর্ব, নাটোর প্রতিনিধি :: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান সরকারের ভিশন-২০২১ এর আলোকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ফোর্সেস গোল-২০৩০ অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো বিন্যাস ও পরিবর্তনের মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে আধুনিকায়ন করা হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে মোট চারটি ধাপে পাঁচ বছর মেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে এই ফোর্সেস গোল বাস্তবায়ন করে একটি আধুনিক, কার্যকর ও যুগোপযোগী একটি সেনাবাহিনীতে পরিণত করা হবে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি, অবকাঠামো উন্নয়ন, দুযোর্গ মোকাবেলা ও বিদেশে শান্তি রক্ষায় আন্তর্জাতিক সুনাম আরো বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে সেনাবাহিনীকে কাজ করতে হবে। রোববার সকালে নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের ৫ম ইঞ্জিনিয়ার কোর পূণুর্মিলনী ও বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যের শুরুতে স্বাধীনতার এই মাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা ও ৩০ লাখ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং দুই লাখ নির্যাতিত মা-বোন ও যুদ্ধাহত যুক্তিদ্ধোদের প্রতি সমবেদনা জানান। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ভাগ্যের সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি বীর শ্রেষ্ঠ উপাধী পাওয়া ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার কোরের মুক্তিযোদ্ধা। কোর অব ইঞ্জিনিয়ার সেনাবাহিনীর একটি গুরুত্ব পূর্ণ অংশ পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনীর গন্ডি পেরিয়ে সারাদেশের রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো উন্নয়নে অবদান রেখেছে পঞ্চম ইঞ্জিনিয়ারিং কোর পার্বত্য এলাকার সড়ক যোগাযোগ, ঢাকা শহর প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ, রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্প ও মিরপুর-এয়রপোর্ট ফ্লাইওভার নির্মাণ এবং কাতার সহ বিভিন্ন দেশে শান্তি মিশন ও পুনর্বাসনে গিয়ে বিশেষ অবদান রেখেছে এই কোর। যুদ্ধবিদ্ধস্ত কুয়েত পুনর্গঠনে অবদান রেখে তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিকভাবে উজ্জ্বল করেছে। বিভিন্ন সময়ে দেশ-বিদেশে দূর্যোগ ও দুর্বিপাকে বিপন্ন মানুষের পাশে দাড়িয়েছে। এছাড়াও শান্তি রক্ষি বাহিনীতে এই কোরের সদস্যরা সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আশা ব্যক্ত করে বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের হাতে গড়া এই সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিরলস প্রশিক্ষণ, কঠোর অনুশীলন ও সুশৃংখল চর্চার মাধ্যমে এই কোরের সদস্যরা আগামীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সম্মানকে দেশ-বিদেশে আরো বৃদ্ধি করবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সুখী সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে আর সে লক্ষ্য সামনে রেখেই ২০২১ সালের মধ্যে এই দেশকে বিশ্বের দরবারে মধ্যম আয়ের ও ডিজিটাল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইঞ্জিনিয়ার কাদিরাবাদ সেনানিবাসের প্যারেড গ্রাউন্ডে কোরের ৫ম ইঞ্জিনিয়ার কোর পুনর্মিলনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। এর আগে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের শহীদদের ম্মরণে স্মৃতি অ¤¬ান এ পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় তিনি শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিপ্রস্তর উম্মোচন করেন। তিনি সেনানিবাস চত্বরে একটি গাছের চারা রোপন করবেন। পঞ্চম ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের পুর্নমিলনী ও বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলনে যোগ দিতে নাটোরে এসে পৌঁছলে সেনা প্রধান জেনারেল আব্দুল মুবিন কাদিরাবাদ সেনানিবাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান। এসময় উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক, কর্নেল কমাডেন্ট কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্স লে: জেনারেল আব্দল ওয়াদুদ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, রাজশাহীর সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, উর্দ্ধতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ।

