রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১১

তানোরে লাইসেন্সবিহীন ফার্ম্মেসীগুলোতে চলছে অপচিকিৎসা

বাঘা নিউজ ডটকম, বিজয় ঘোষ/আলিফ হোসেন, ২৫ ডিসেম্বর : রাজশাহীর তানোরের সর্বত্রই ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে লাইসেন্সবিহীন ফার্ম্মেসী (ওষুধের দোকান)।
জানাগেছে, অধিকাংশ ফার্ম্মেসীতে মানবদেহের চিকিৎসার নামে চলছে অপচিকিৎসা। একশ্রেণীর ফার্ম্মেসী মালিক নিজেদের চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা দেওয়ার নামে অপচিকিৎসা করছেন। আবার অধিকাংশ ফার্ম্মেসীতে সরকারি, মেয়াদোত্তীর্ণ, যৌনউত্তেজক, গরু মোটাতাজাকরণ ও নেশা জাতীয় ওষুধ বিক্রি করছেন। একশ্রেণীর ফার্ম্মেসী মালিক স্বাস্থ্য অসেচতন সাধারণ মানুষকে চিকিৎসার নামে করছেন রমরমা বাণিজ্য। তাঁরা জীবনরক্ষাকারী ওষুধের নামে প্রতিদিন ক্ষতিকর ওষুধ অবাধে বিক্রি করছে। অল্প পুঁজিতে অধিক মুনাফা হওয়ায় এলাকার যুবকরা এই ফার্ম্মেসী ব্যবসার দিকে ঝুঁকছেন। ফলে দিন দিন বাড়ছে ফাম্মের্সীর সংখ্যা। অন্যদিকে ফার্ম্মেসীগুলোর লাইসেন্স না থাকায় সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তানোরের বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ ওষুধের দোকানে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই শক্তিশালী এন্টিবায়োটিকসহ মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে। সরকারি নিয়মানুযায়ী চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া যে কোনো ওষুধ বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও এখানকার ফার্ম্মেসী মালিকগণ তা মানছেন না।
স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে এসব ফার্ম্মেসীর অন্যতম তানোরের কালীগঞ্জহাটের আনন্দ ফার্ম্মেসী। স্থানীয় স্বাস্থ্য-উপকেন্দ্রের কতিপয় চিকিৎসকের সঙ্গে যোগসাজশ করে ফার্ম্মেসী মালিক সরকারি, মেয়াদোর্ত্তীন, গরু মোটাতাজাকরণ, নেশা জাতীয় ও যৌনউত্তেজক ওষুধ অবাধে বিক্রি করছেন। কালীগঞ্জহাট এলাকার মোজাম্মেল হক (২৮) ও পিয়ারপুর গ্রামের নাসির উদ্দিন (৩৫) বলেন, আনন্দ ফার্ম্মেসী থেকে ওষুধ কিনে বাড়ি নিয়ে তাঁরা দেখেন ওষুধগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ। তারা এসব ওষুধ ফার্ম্মেসীতে ফেরত দিতে চাইলে ফার্ম্মেসী মালিক ওষুধগুলো ফেরত না নিয়ে তাদের ফিরিয়ে দেন। এ রকম অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে ওই ফার্ম্মেসীর বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে আনন্দ ফার্ম্মেসীর স্বত্তাধিকারী আনন্দ কুমার এসব অভিযোগ অস্বিকার করলেও মানুষকে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়টি তিনি শিকার করে বলেন, আমি চিকিৎসা দিলে রোগী ভালো হয়, সেটিই বড় কথা। তিনি বলেন, ডাক্তারের সার্টিফিকেট ছাড়া চিকিৎসা করা যাবে না এমন কথা ঠিক নয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এর  (ভারপ্রাপ্ত) টিএইচও ডা: আব্দুল আলিম বলেন, চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ওষুধ সেবন করলে শরীরের নানা প্রতিক্রিয়াসহ মূত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে এ্যাজমা ও ডায়বেটিকসসহ গুরুত্বর রোগে আক্রান্ত রোগীরা বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার হয়। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির তদরকির বিষয়টি ড্রাগ প্রশাসনের। এক্ষেত্রে তাদের কোন কিছু করার নেই। চিকিৎসকের সার্টিফিকেট ব্যতিত চিকিৎসা করা দন্ডনীয় অপরাধ।
Ruby