সোমবার, ৯ জানুয়ারী, ২০১২

দেশে ফিরলেই মোশাররফকে গ্রেফতার


Image_1326051854.jpgবাঘা নিউজ ডটকম, ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক :: পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ দেশে ফিরলে তাকে গ্রেফতার করা হবে বলে দেশটির সরকার পক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন। এএফপি ও রয়টার্স।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেত্রী বেনজির ভুট্টোর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যোগসাজশ থাকার দায়ে মোশাররফকে গ্রেফতার করা হবে এবং এ জন্য নতুন কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানার প্রয়োজন পড়বে না বলে জানিয়েছেন সরকার পক্ষের আইনজীবী চৌধুরী জুলফিকার আলী। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের একটি আদালত এর আগে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
পাকিস্তানের পরবর্তী পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দেশে ফিরে আসবেন বলে পারভেজ মোশাররফ ঘোষণা করার কয়েক ঘণ্টা পরে এ কথা বললেন জুলফিকার আলী। কিন্তু মোশাররফের মুখপাত্র ফাওয়াদ চৌধুরী বলেছেন, ওই গ্রেফতারি পরোয়ানার কোনো আইনগত বৈধতা নেই। আদালতে ওই গ্রেফতারি পরোয়ানাকে চ্যালেঞ্জ করে এরই মধ্যে মামলা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, চলতি সপ্তাহে পাকিস্তানে ফেরার চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করবেন পারভেজ মোশাররফ।
২০০৮ সালে ক্ষমতা ত্যাগে বাধ্য হওয়ার পর থেকে পারভেজ মোশাররফ লন্ডন এবং দুবাইয়ে বসবাস করছেন। তিনি বর্তমানে বিদেশ থেকে অল পাকিস্তান মুসলিম লিগ নামে একটি ছোট রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পাকিস্তানের কোথাও এ দলের শক্তিশালী ঘাঁটি নেই।
২০০৭ সালে রাওয়ালপিন্ডির এক নির্বাচনী সভাশেষে আততায়ীর গুলি ও বোমায় নিহত হয়েছিলেন বেনজির ভুট্টো। গত নভেম্বরে বেনজির ভুট্টো হত্যা মামলায় সাতজনকে অভিযুক্ত করেছে দেশটির সন্ত্রাসবিরোধী আদালত। অভিযুক্তদের মধ্যে দু’জন পুলিশ কর্মকর্তা এবং পাঁচজন তালেবান গেরিলা রয়েছেন। কিন্তু সে সময় পারভেজ মোশাররফের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।
এদিকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি বলেছেন, ক্ষমতা ছাড়ার জন্য কেউ তার কাছে দাবি জানায়নি। এটা তার জন্য সম্ভাব্য করণীয় কাজ বলেও তিনি মনে করেন না। পাকিস্তানের ক্ষমতা কাঠামোয় শক্তিশালী অবস্থানের অধিকারী সশস্ত্র বাহিনী জারদারিকে ক্ষমতার বাইরে দেখতে চায় বলে জল্পনা-কল্পনার প্রেক্ষাপটে প্রেসিডেন্ট জারদারি এই মন্তব্য করেছেন। রয়টার্স।
পাকিস্তানের একটি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে তিনি বলেছেন, কেউ যদি ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার জন্য আমার কাছে দাবি জানায়, আমি তখন এ বিষয়ে আপনাদের জানাব। এ সাক্ষাত্কারটি এখনও ওই টেলিভিশনে প্রচার হয়নি। এ সাক্ষাত্কারে তাকে দৃঢ় মনোবলের অধিকারী বলে মনে হয়েছে। এক মাস ধরে চিকিত্সার জন্য দুবাইয়ে থাকার পর জারদারি গত মাসে পাকিস্তানে ফিরে এসেছেন।
পাকিস্তানের ক্ষমতাধর জেনারেলদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করার জন্য মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের কাছে স্বাক্ষরবিহীন একটি লিখিত চিঠি প্রেসিডেন্ট জারদারির পক্ষ থেকে পাঠানোর খবর ফাঁস হয়ে পড়ার পর দেশটির সশস্ত্র বাহিনী ও বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের মধ্যে টানাপড়েন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করা হয়। পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্ট এ বিষয়ে তদন্ত করছে। তদন্তের ফলাফলে ওই চিঠির সঙ্গে জারদারির সম্পর্ক আবিষ্কৃত হলে দেশটির দুর্বল সরকার আরও হুমকি বা চাপের মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সামরিক সূত্রগুলোকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জারদারির ওপর বিতৃষ্ণ হয়ে পড়েছে এবং তারা বৈধ পন্থায় ক্ষমতা থেকে তার অপসারণ চায়। অবশ্য পাকিস্তানের সরকার ও সেনাবাহিনী সামরিক অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা নাকচ করে আসছে। (সূত্র-ইউকে বিডি নিউজ)
Ruby