রবিবার, ৮ জানুয়ারী, ২০১২

সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা নাই বগুড়ার শেরপুরের মহাসড়কে অবাধে চলছে অবৈধ পরিবহন ভটভটি

বাঘা নিউজ ডটকম, দীপক সরকার,বগুড়াঃ সরকারী নিষেধাজ্ঞা থাকলে ও বগুড়ার শেরপুরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে অবাধে প্রতিনিয়ত চলাচল করছে প্রায় ৪ শতাধিক ভটভটি,নসিমন.করিমন। এসব অবৈধ ভটভটি মহাসড়কে চলাচলে অযোগ্য হলেও পৌরশহরে মহাসড়কের দু’পাশে ব্যাঙের ছাতার মতো প্রায় অর্ধশতাধিক কারখানা গড়ে উঠেছে। পুলিশ প্রশাসন ও পৌরসভাকে  মাসোহারা প্রদানের মাধ্যমে সার্বক্ষনিক অবৈধ সহযোগীতা পেয়ে যাচ্ছে এসব ভটভটি চালক ও কারখানার মালিকরা।
জানা গেছে, শেরপুর শহরের বিভিন্ন ওয়েলডিং কারখানায় প্রতিনিয়ত পাল্লা দিয়ে তৈরী হচ্ছে মহাসড়কে চলাচল অযোগ্য শ্যালো মেশিন দিয়ে অবৈধ ভটভটি,নছিমন,করিমসহ একাধিক নামের যাত্রী বা মালবাহী বাহন। এসব অবৈধ গাড়ী নিজ উপজেলা সহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বিক্রি হচ্ছে। এসব গাড়ির সরকারীভাবে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অর্থরিটি(বিআরটিএ)এর অনুমোদন বা চলাচলে কোন রুট পারমিট ও ফিটনেস সনদ পত্র থাকলেও কোন নিয়মনীতির বালাই উপেক্ষা করে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীন সড়কের মতো মহাসড়কেরও পন্যবাহী বা যাত্রীবাহী অবৈধ ভটভটি অবাধে চলাচল করছে। মোটা অংকের মাসোহারা পদ্ধতি দিয়ে পুলিশ প্রশাসন ও পৌরকর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই এসব বাহন চলাচল ও তৈরী করে আসছে  বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে। এসব বাহনের অবাধে চলাচল ও তৈরীতে সহায়তা করে আসছে শেরপুর উপজেলা অটোভ্যান(ভটভটি) মালিক সমিতি ও সরকারী দলের কতিপয় নেতারা। মহাসড়কে ভটভটি চলাচলে সরকারী কোন নিতিমালা বা নির্দেশ না থাকায়  স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও পৌরসভার অনুকুলে কোন টার্মিনাল না থাকলেও  আর্থিক ফান্ড তেরীর উদ্দেশ্যে  অবৈধভাবে সুবিধা আদায়ের জন্য বাৎসরিক ইজারা প্রদানের মাধ্যমে অর্থ বানিজ্য করে আসছে। সম্প্রতি আগামী ২০১২ সালের জন্য  শেরপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ অবৈধ ভটভটি শহরের মহাসড়ক সহ বিভিন্ন সড়কে চলাচলের জন্য ইজারা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কথিত টার্মিনাল প্রায়  ৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকায় এক শ্রমিক ইউনিয়ন নেতার পৃষ্ঠপোষকতায়  উপজেলার সাধুবাড়ী এলাকার আব্দুস সাত্তারের কাছে বাৎসরিক লীজ প্রদান করেছে। লীজ মোতাবেক ইজারাদার তার মনগড়া প্রতি ভটভটি শহরের বিভিন্ন রাস্তায় চলাচলে প্রতিদিনের জন্য ১০ টাকা মুল্যের রশিদ ব্যবহার শহরের প্রায় ১০/১২টি পয়েন্ট থেকে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করে আসছে। অপরদিকে প্রতিটি ভটভটি মালিকদের কাছ থেকে মাসিক ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে উপজেলা ভটভটি(অটোভ্যান) মালিক সমিতির নেতারা। মালিক সমিতির একজন দায়িত্বশীল নেতা নাম প্রকাশের অনিচ্ছায় বলেন, প্রতিটি ভটভটির মালিকদের কাছ থেকে যে মাসোহারা গ্রহন করি তার সিংহভাগ স্থানীয় পুলিশ ও পৌরকর্তৃপক্ষ এবং কতিপয় প্রভাবশালী নেতাদের মাসোহারা পদ্ধতি অনুসারে ভাগ করে দেয়। মাসিক চাঁদার বাকি অংশ সমিতির সদস্যদের আভ্যন্তরিন কাজে খরচ হয়। অপরদিকে শহরের মহাসড়কের দু’পার্শ্বের প্রায় অর্ধ শতাধিক কারখানায় এসব অবৈধ ভটভট তৈরীতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা করে আসছে ওয়েলডিং ওয়ার্কশপ মালিক সমিতি। এসব অবৈধ বাহন তৈরীকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে পুলিশের মাসোহারা পদ্ধতি সচেতনমহলকে ভাবিয়ে তুলছে। অবৈধ তৈরী ঠেকাবে কে? কথায় বলে- যে শরিষা দিয়ে ভুত তাড়ানো হবে সেই শরিষার মধ্যেই তো ভুত রয়েছে, তাহলে দুর্নীতি কেন হবে না। এসব বিষয়ে কথা প্রসঙ্গে  একজন ওয়ার্কশপ মালিক বলেন-সব ওয়ার্কশপ থেকে মাসিক ধার্য্য চাঁদার অর্থ উত্তোলন করে মাসিক ভিত্তিতে পুলিশকে প্রদান করা হয় অনেক সময় আবার ফাঁড়ি পুলিশের কর্তারাও এসব অর্থ নিজ দায়িত্বে গ্রহন করে। তাহলে আমাদের দোষ কথায়। তাছাড়া অর্থের প্রয়োজনতো সবারই আছে, আমরাতো আর চুরি করে খাচ্ছি না কাজের বিনিময়ে উপার্জন করছি। এসব অবৈধ গাড়ী অবাধে মহাসড়কে অবাধে চলাচল করায় ঘটে যাচ্ছে ছোট খাটো জানযট ও দূর্ঘটনাসহ প্রানহানি। অনেক সময় এসব ভটভটির চলাচলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ নির্দেশে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ২/৪টি ভটভটি আটক করলেও সুবিধাভোগী কতিপয় নেতাদের সুপারিশ ও আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে রাতের আধারে ছেড়ে দেয়া হয়। ফলে বেপরোয়াভাবে এসব অবৈধ ভটভটির মালিক ও চালকেরা কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবাধে চলাচল করছে। এব্যাপারে শেরপুর পুলিশ ফাঁড়ির টি এস আই মোঃ হাসান আলী বলেন,মহাসড়কসহ শহরের বিভিন্ন সড়কে এসব ভটভটি চলাচল ও তৈরীকারী কারখানাগুলোর  ব্যাপারে পূর্বের কর্তারা কি করে গেছে তা জানা নাই,তবে আমি কয়েকদিন ধরে এসেছি অবশ্যই অবৈধ ভটভটি চলাচলে অবৈধ টোল আদায় ও তৈরী বন্ধের চেষ্টা করে আসছি ।
এ ব্যাপারে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন,ভটভটি চলাচলে সরকারীভাবে নির্দেশনা রয়েছে। তবে দেশের প্রায় সব জেলা-উপজেলাগুলোতেই এসব গাড়ী চলাচল করার সুবাধে এমনকি এসব যারা চালায় তারাই সবাই নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন তাই তাদের মানবিক দিক বিবেচনা করেই অবৈধ পরিবহনগুলো চলাচল বন্ধ করা যায়। তবে মাসোহারা আর্থিক সুবিধার কথা বলায় তিনি বলেন -কোন প্রকার মাসোহারা আমার থানাতে চালু নয়। এগুলো মুখরোচক তথ্য বলে তিনি উড়িয়ে দেন।
Ruby