রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

নওগাঁর সাপাহারে এক হলুদ সাংবাদিকের দৌরাত্ম্যে সর্ব মহল অতিষ্ঠ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

মোঃ আককাস আলী, নওগাঁ প্রতিনিধি :: নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় তথা কথিত সাংবাদিক নামধারী  কতিপয়  উঠতি বয়সের  প্রতারক যুবকের লাগামহীন কর্মকান্ড ও অপতৎপরতায়  সরকারী বে-সরকারী অফিস আদালতের কর্মকর্তা কর্মচারী সহ সর্ব স্তরের সাধারন মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগী বিভিন্ন মহলের একাধীক অভিযোগে জানা গেছে ওই প্রতারক চক্রের মুল হোতা হিসেবে কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে উপজেলা সদরের মহুরী পট্টি এলাকার জৈনক এক ব্যবসায়ীর পুত্র । সে গত ২০১০ সালে স্থানীয় পাইলট হাইস্কুলে ১০ম শ্রেনীতে লেখাপড়া করা কালে সাপাহার বিজয় মেলায় বেসরকারী চ্যানেল ইটিভি বাংলার নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি (সাংবাদিক) হিসেবে ভূয়া পরিচয় দিয়ে মেলা কমিটিকে ভয় ভীতি দেখিয়ে তাদের নিকট থেকে প্রতি রাতে বিপুল পরিমানের অর্থ হাতিয়ে নিতে থাকে।  এ বিষয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে সাপাহার প্রেসক্লাবের সাংবাদিকগন তাকে হাতে নাতে ধরে ফেলে তার নিকট থেকে প্রতারনার কাজে ব্যবহৃত বেসরকারী চ্যানেল ইটিভি বাংলার একটি ভূয়া পরিচয় পত্র ও লগো সহ একটি মাউথপিস উদ্ধার করে । সে ওই বছরের এস. এস. সি. পরীক্ষার্থী হওয়ার কারনে তার পরিবারের বিশেষ অনুরোধে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে কানে ধরে ভুল স্বীকার করলে পুলিশে না দিয়ে মানবিক কারনে সে সময় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতি ওই প্রতারক যুবক তার প্রতারনার ধরন পাল্টিয়ে নিজেকে দেশের ২০/২৫টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি  পরিচয় দিয়ে অবাধে উপজেলা প্রসাশন সহ সাধারন মানুষের সঙ্গে ব্যাপক প্রতারনা চালাতে থাকে । সে রাজধানীর আন্ডার গ্রাউন্ডের প্রকাশনা হিসেবে পরিচিত নাম সর্বস্ব একটি পত্রিকা ও সংবাদ সংস্থার পরিচয় পত্র তৈরী করে তা টাকার বিনিময়ে সহজ সরল স্কুল কলেজের ছাত্র, কাঁচাতরকারী বিক্রেতা,রিকসা চালক,চা বিক্রেতা, ক্যামেরা ম্যান সহ  বিভিন্ন দোকানের কর্মচারীকে সরবরাহ দিয়ে সাংবাদিক বানিয়ে বিভিন্ন পেশার ৫০ /৬০ জনের নিকট থেকে বিপুল অর্থ বাগিয়ে নিয়েছে বলে তার প্রতারনার শিকার আলম, রয়েল, সম্্রাট সহ বেশ কয়েক জন জানান। গত ১৫/২০ দিন পুর্বে সে মহাদেব পুরের কালু শহর মেলায় গিয়ে অনুরুপ ভাবে কমিটির লোকজনের নিকট থেকে ভূয়া পরিচয় দিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে চাঁদাদাবী করলে মেলা কমিটি তাকে উত্তম মধ্যেম দিয়ে একটি ঘরে আটক রাখে । পরে মহাদেব পুরে মহাদেবপুর প্রেসক্লাবের সম্পাদক ও সদস্যগনের হস্তক্ষেপে গভীর রাতে সে ছাড়া পায়। মেলা কমিটি এ সময় তার ক্যামেরা ও কথিত পত্রিকার আইডি কার্ডগুলি রেখে দেয়।  সাপাহার সদরের সুবর্না কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারের মালিক মোঃ আদম আলী অভিযোগ করেন তার নিকট থেকে কম্পিউটার যন্ত্রাংশ ও একটি ডিজিটাল ক্যামেরা ভাড়া নিয়ে প্রায় ৪/৫হাজার টাকার বিল দীর্ঘ দিনেও পরিশোধ না করায় পাওনা টাকা চাইলেই উল্টো তার বিরুদ্ধে পত্রিকায় সংবাদ ছাপিয়ে হয়রানীর হুমকী দিয়ে আসছে। এ ছাড়া পার্শ্ববতী পতœীতলা উপজেলার উত্তরাম পুরের আবুতালেব জানান গত সপ্তাহে তার নিকট থেকে ১৫শ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ছিল তাদের পত্তন নেওয়া জমির দখলদার মুক্ত করে দেওয়া সহ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করার জন্য । কিন্তু কোন কিছুই করতে না পারায় অবশেষে ফেরত দিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, চলতি  এস এস সি পরীক্ষা চলা কালে সদরের পাইলট স্কুল কেন্দ্রে ওই প্রতারক তার সাথে ৫/৬ জন উঠতি বয়সের যুবককে নিয়ে বিনা অনুমতিতে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে প্রবেশ করে হৈ চৈ শুরু করে এসময় তার পরিচয় জানতে চাইলে দায়ীত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের  সঙ্গে অশোভন আচরন সহ এলাপাতাড়ী ভাবে  ছবি তুলে পত্রিকায় ছাপিয়ে অন্যত্র বদলি করার হুমকী দিয়েছে। ্এ বিষয়ে সাপাহার থানার অফিসার্স ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আলমাছউদ চৌধুরী জানান ওই প্রতারক চক্রের  বিভিন্ন কর্মকান্ডের কথা দীর্ঘ দিন যাবৎ তিনি লোক মুখে  শুনে আসছেন। তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান । সাপাহার প্রেস ক্লাবের সভাপতি তছলিম উদ্দীন, সাধারন সম্পাদক কামরুল ইসলাম, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সাপাহার শাখার সভাপতি ছাদেক উদ্দীন ,সম্পাদক আব্দুর রহিম,সাপাহার রিপোর্টাস ফোরামের আহব্বায়ক হাফিজুল হক, ও সিনিয়র সাংবাদিক বাবুল আকতার সহ আঞ্চলিক ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় কর্মরত সকল সাংবাদিকগন চরম উদ্বেগ প্রকাশ সহ এ ধরনের অপতৎপরতা রোধে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
Ruby