বুধবার, ২৮ মার্চ, ২০১২

আজ প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে আসছেন; চট্টগ্রামের উন্নয়নে তুলে ধরা হচ্ছে আট দাবি

জীবন কৃষ্ণদেবনাথ চট্টগ্রাম ব্যুরো :: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার চট্টগ্রামে আসছেন তিনি  ৮টি উন্নয়ন প্রকল্প ও ১৪ দলের উদ্যোগে মহাসমাবেশে যোগ দিবেন। এ উপলক্ষ্যে পুরো নগরী যেন সাজ সাজ রব। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও কঠোর। প্রধানমন্ত্রী আজ ৬টি সরকারি প্রকল্প এবং ২টি বেসরকারি প্রকল্পসহ মোট ৮টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। সবিশেষে নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে ১৪ দলের উদ্যোগে আয়োজিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষন রাখবেন তিনি। আর এ সময় চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে থেকে ৮ দফা দাবি তুলে ধরা হবে বলে জানা গেছে।
 জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী সকাল ১০টায় বন্দরের ফ্লাইওভার উদ্বোধন এবং সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় ৪ হাজার কর্মজীবী মহিলা শ্রমিকদের থাকার জন্য ডরমেটরীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এরপর সাড়ে ১০টায় মুরাদপুরে ১০ তলাবিশিষ্ট এলজিইডি ভবনের উদ্বোধন করবেন।১১টা ১৫ মিনিটে নন্দনকানন বৌদ্ধ মন্দির কাম কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। ১২ টায় চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে সার্কিট হাউজে এবং সাড়ে ১২ টায় সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করবেন। পৌনে দুইটায় দোহাজারী ও হাটহাজারীতে সরকারিভাবে নির্মিত ২০০ মেগাওয়াটের পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং পশ্চিম পটিয়ার জুলধায় বেসরকারিভাবে নির্মিত ১০০ মেগাওয়াটের রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের উদ্বোধন করবেন। এছাড়া বিকাল ৩টায় তিনি পলোগ্রাউন্ডের মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণ দিবেন। 
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৪ দলের উদ্যোগেএ মহাসমাবেশে চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৮ দফা দাবি তুলে ধরবেন নেতারা। চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর নিকট এই দাবি উপস্থাপন করা হবে বলে নগর আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন। মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে সব দাবি তুলে ধরা হবে তার মধ্যে রয়েছে-চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজ করা, চট্টগ্রাম নগরীতে সার্কুলার ট্রেন চালু করা, কর্ণফুলীতে ট্যানেল নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু করা, চট্টগ্রাম-দোহাজারী থেকে কক্সবাজার-ঘুমধুম পর্যন্ত রেল লাইন নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু করা, বায়েজিদ থেকে সীতাকুন্ডের ফৌজদারহাট আউটার সার্কুলার রোড়ের কাজ সম্পন্ন করা। এছাড়াও চট্টগ্রামের গ্যাস সমস্যা নিরসন করা ও গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা।
সিএমপি সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম সফর উপলক্ষ্যে প্রায় ১ হাজার ৯শ’ পুলিশ সদস্য মোতায়েনের বিষয়টি মাথায় রেখে সিএমপি এখন নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজিয়েছেন। এর আগে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য পুলিশের সদর দপ্তরের কাছে ১ হাজার পুলিশ চেয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ। একই সাথে র‌্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ে সার্কিট হাউজে গত রোববার প্রশাসনের সাথে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কোন কোন পথ ব্যবহার করবেন তা নির্ধারণ করে সেই পথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া যানজট নিরসনের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয় তত্ত্বাবধানে দুটি হাতি আনা হয়েছে। এগুলো বর্তমানে চট্টগ্রামের বন গবেষণা ইনিষ্টিটিউটে রয়েছে।  এ ব্যাপারে পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের একান্ত সহকারী এনায়েতুর রহিম বলেন, একটি হাতি রাঙ্গুনিয়ার বাসীর পক্ষ থেকে এবং অন্যটি হাতি চট্টগ্রাম বাসীর পক্ষ হয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নিবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে,  মহাসমাবেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য মঞ্চের সামান্য দূরে মাঠের দোতলা গ্যালারিতে আলাদা মঞ্চ বানানো হয়েছে।  আজ সকাল ৯টায় শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রথমে শিল্পী অশোক সেনের নেতৃত্বে আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী, জয় বাংলা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর চট্টগ্রামের শিল্পীরা গান পরিবেশন করবেন। এরপর সকাল ১০টার দিকে মঞ্চে উঠবেন মমতাজ ও ফকির শাহাবুদ্দিন। তারা কমপক্ষে দু’ঘণ্টা গান পরিবেশন করবেন। বেলা ১২টায় শুরু হবে মহাসমাবেশের মূল অনুষ্ঠান।
নগরীর সার্কিট হাউসসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে তোরণ বানানো হয়েছে। সার্কিট হাউস এলাকা অনেকটা ঘিরে ফেলা হয়েছে নগর নেতা, উঠতি নেতা ও জুনিয়র নেতাদের বিশাল বিশাল ডিজিটাল ব্যানারে।
Ruby