সোমবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০১২

সিংড়ার হাট-বাজারগুলো অবৈধ দখলদারদের কবলে

মোল¬া মোঃ রানা চলনবিল প্রতিনিধি ঃ -নাটোরের সিংড়া উপজেলার বিলদহর এলাকায় ব্রিটিশ জমিদার আমলে নির্মিত বিলদহর হাট অবৈধ দখলদারদের কবলে পরায় প্রতি বছর সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একাধিকবার উচ্ছেদ করা হলেও বার বারই আগের চেয়ে দৃঢ়ভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে হাটের জায়গাগুলো। এতে একদিকে যেমন প্রতি সপ্তাহে দুইদিন বসা হাটে দূর দূরান্ত থেকে আসা দোকানী ও হাটুরেদের সমস্যা বাড়ছে পাশাপাশি জায়গা কমে যাওয়ায় ইজারার উপযুক্ত টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
স্থানীয় সাধারণ দোকান্দার ও সচেতন এলাকাবাসী দাবী করেন, উপজেলার চামারী ইউনিয়নের বিলদহর বাজারে ব্রিটিশ আমলে প্রায় দুই একর সরকারী জায়গার ওপর এই অঞ্চলের প্রায় ছয়-সাতটি ইউনিয়নের কৃষক, দিন মজুর ও সাধারণ জনগণের বেচা-কেনার সুবিধার্থে শুরু হয় বিলদহর হাট। এই হাটে সংশ্লিষ্ট এলাকা ও তৎসংলগ্ন এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত বিভিন্ন ফসলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সবজি, চাল, ডাল,তেল ও তরিতরকারীর দোকান বসে। হাটের পাশ দিয়ে সিংড়া আত্রাই নদীর শাখা গুর নদী প্রবাহিত হওয়ায় নদীতে নৌকা নিয়ে দূর দূরান্ত থেকে আসে হাটুরে দোকান্দার ও ক্রেতা। প্রতি হাটে লক্ষ লক্ষ টাকা কেনা-বেচা হয়। বর্ষাকালে হাটে আসা দোকানীদের বেচা-কেনার সুবিধার্থে হাটের মাঝখানে তোলা হয় দো-চালা চিনের শেড। প্রতি বছর উপজেলা নির্বাহী অফিসের তত্বাবধানে ও নাটোর ভূমি অফিসের উদ্যোগে টেন্ডারের মাধ্যমে হাটটি ইজারা দেওয়া হয়। এ থেকে সরকারের আয় হয় লক্ষ লক্ষ টাকা। কিন্তু স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীরা ধীরে ধীরে হাটের জায়গা দখল করে স্থাপন করতে থাকে স্থায়ী দোকান, মুরগীর ফার্ম, চা-ষ্টল, তেলের ড্রাম ইত্যাদি। এতে প্রতি বৃহস্পতিবার ও রবিবার হাটের দিনে এখানে আসা দূর দূরান্তের দোকানী ও খদ্দেরদের চলাচল ও কেনা বেচায় পরতে হয় নানা মুখী সমস্যায়। পাশাপাশি সরকারী খরচে নির্মাণ করা টিনের চালাগুলো নষ্ট হতে থাকে চা-ষ্টলগুলোর ধোঁয়া ও আগুনের তাপে। এছাড়া নদী দিয়ে আসা মাল বোঝাই নৌকা ভিরার ঘাটের পাশেই জায়গা দখল করে গড়ে ওঠে মুরগীর ফার্ম। এতে নৌকাগুলো হাটের ঘাটে আসতে পোহাতে হচ্ছে দূর্ভোগ।
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে হাটের ইজারাদার শাখাওয়াত আলম বকুল দখলের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এই সব অবৈধ দখলদারদের জায়গা দখলের কারণে প্রতি হাটেই কষ্ট করতে হয় দূর দূরান্ত থেকে আসা দোকানী ও খদ্দেরদের । দোকানীরা তাদের মাল-সরঞ্জাম বিক্রয়ের জন্য পাননা কোন জায়গা। অনেক দোকানীকে ফিরতে হয় বিক্রয় ছাড়াই। এতে খাজনাও ওঠে কম। গত দুই বছরে তিনি যে টাকা দিয়ে হাটটি ইজারা নিয়েছিলেন তাতে তার দুই থেকে তিন লক্ষ টাকা লাভের কথা থাকলেও বাস্তবে লোকসানের মুখে পড়েছেন দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা। এবছরও তিনি পূণরায় ছয় লক্ষ পঁচাত্তর হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছেন হাটটি। তিনি আশঙ্কা করছেন, এবারেও তাকে লোকসানের মুখে পরতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে চামারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন জানান, তিনি ক্ষমতায় থাকতে স্থানীয় ইউএনও অফিসের উদ্যোগে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করেছিলেন। এখন আবারও তারা হাটের মেঝের সোলিং জোর করে তুলে সিমেন্টের খুঁটি বসিয়ে স্থায়ী দোকান নির্মাণ করে দখল করছেন একের পর এক হাটের জায়গা।
স্থানীয় দোকানী ও সচেতন মহল মনে করেন, সরকারী এই হাটের জায়গা সংরক্ষণ ও হাটে আসা দোকানী এবং খদ্দেরদের স্বার্থ বিবেচনা করে পাশাপাশি সরকারী রাজস্ব বাড়াতে অবিলম্বে দখলদারদের উচ্ছেদ করে সরকারী জায়গা দখলমুক্ত করা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুলাহ হারুন দখলের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন স্বল্প সময়ের মধ্যে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।




Ruby