শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

নওগাঁয় অতিরিক্ত সেচ চার্জ আদায় কৃষক দিশেহারা


মোঃ আককাস আলী, নওগাঁ প্রতিনিধি :: নওগাঁয় চলতি মৌসুমে সরকারি ও বেসরকারি পাম্পগুলো সেচ চার্জ বাবদ মাত্রাতিরিক্ত টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছেঅন্যদিকে লোডশেডিং অতিষ্ঠ করে তুলেছে জনজীবন

মান্দা বিএমডিএ অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৪টি ইউনিয়নেই বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষের অধীনে চালিত ডিপ-টিউবওয়েল, ৪৮৪টি, ব্যক্তিমালিকানায় ৬৪টি, এসটিডব্লিউ ৪ হাজার ৭৭৭টি, বিদ্যুৎচালিত ১ হাজার ৪৫০টিবিদ্যুৎচালিত এলএলপি ৯৮টি, ডিজেলচালিত ১৩৬টি হাতেগোনা দুএকটি ছাড়া বাকি সবগুলোতেই ৬০০ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত সেচ চার্জ আদায় করা হচ্ছে

সচেতন মহল মনে করছেন কর্তৃপক্ষের যোগসাজশেই চলছে অতিরিক্ত সেচ চার্জ আদায়ের মাধ্যমে কৃষক নির্যাতনএ ব্যাপারে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ মান্দার সহকারী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান অতিরিক্ত সেচ আদায়ের কথা অস্বীকার করেনতিনি বলেন, বিঘাপ্রতি ৬শ থেকে ৭শ টাকা খরচ হতে পারে

উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. ইকরামুল বারী টিপুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অতিরিক্ত সেচ আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেইতবে সেচপাম্প মালিকরা এক কিস্তিতে টাকা আদায় করতে পারবে না

বিদ্যুৎ খরচ ও অন্যান্য খরচের ভিত্তিতে একধিক কিস্তির মাধ্যমে টাকা আদায় করবেবিঘাপ্রতি অতিরিক্ত সেচ চার্জ (ভাড়া) আদায় করার অভিযোগ কৃষকরা দরখাস্তের মাধ্যমে উপজেলা সেচ কমিটিকে জানালে অবশ্যই সেচ আদায়কারী পাম্প মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবেসরজমিন দেখা যায় ভালাইন ইউপির বৈলশিং গ্রামের বৈলশিং ১নং ডিপ-টিউবওয়েলের ট্রান্সফরমার চুরি এবং মাটির নিচে ড্রেন দেয়ার কথা বলে গত ২ বছরসহ এ বছরও বিঘাপ্রতি ১২শ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছেএকই এলাকায় বৈলশিং ৩নং ডিপ-টিউবওয়েলে বোরিং নষ্ট হওয়ার সুবাদে স্থানীয় নিয়োগকৃত ম্যানেজার বিঘাপ্রতি ১ হাজার ৭৫০ টাকা হারে বিঘাপ্রতি ভাড়া আদায় করেন

উপজেলা ঠাকুরমান্দা বিলে কোনো কোনো সেচ মালিকরা ৪ হাজার পর্যন্ত ভাড়া আদায় করছেনএ ছাড়া দেলুয়াবাড়ি, কালিগ্রাম, জোতবাজার, সতীহাট, শ্রীরামপুর, বালুবাজার, পাকুড়িয়া, কালিকাপুর, মনহরপুর, রনাহার, দোসতী, পালপাড়া, নলঘৈর, পরানপুর, ঘাটকৈর, লক্ষ্মীকুড়ি, পাজরভাঙ্গা, বদ্দিপুর, সাবাইহাটসহ সর্বত্রই কমবেশি অতিরিক্ত সেচ চার্জ আদায়ের ঘটনা দেখা গেছে

ক্ষেত্রবিশেষে অপারেটরদের সহযোগিতায় স্থানীয়ভাবে নিয়োগকৃত ম্যানেজার ও কমিটির গুটিকয়েক ব্যক্তি বিশেষ কায়দায় সেচপাম্প নষ্টের বিভিন্ন অজুহাত দাঁড় করিয়ে অতিরিক্ত খরচ হয়েছে বলে নামে-বেনামে ভাউচার অথবা পকেটে রক্ষিত ময়লাযুক্ত ছোট নোটবুক ও চিরকুট দেখিয়ে কৃষকদের হুমকি-ধামকি দিয়ে হিসাব বুঝে নিতে বাধ্য করা হচ্ছেকেউ প্রতিবাদ করলে তাদের জমিতে পানি না দিয়ে পুড়িয়ে ফসল মারার ঘটনা অহরহ ঘটছেএলাকার সাবেক এমপি সামসুল আলম প্রামাণিক বলেন, কৃষক নির্যাতন বন্ধ করা না হলে জাতিকে একদিন অনাহারে থাকতে হবে, তখন এ সমস্যা সমাধানে জাতিকে বড় ধরনের খেসারত দিতে হবে
Ruby