শুক্রবার, ১৬ মার্চ, ২০১২

সোনাতলায় জমিজমা সংক্রান্ত সংঘর্ষে দু’পক্ষের মারপিটে আহত ৮

গাবতলী ও সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধি :: বগুড়ার সোনাতলার উপজেলার তেকানী চুকাইনগর ইউনিয়নের পশ্চিম তেকানী চুকাইনগর গ্রামে জমি দখলকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৮জন ব্যক্তি আহত হয়েছে।
জানাগেছে, ওই গ্রামের মৃত খবর আলী খন্দকারের ছেলে আব্দুল খালেক খন্দকার (৪০) ও তার লোকজন পশ্চিম তেকানী মৌজার জে, এল নম্বর ঃ ১৮ এর সাবেক ৫৬৯ নং দাগে ২১ শতাংশ জমি পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে ভোগদখল করে আসছিল। সম্প্রতি ওই জমি ক্রয়সুত্র ধরে হাঁসরাজ গ্রামের মৃত ইনছার আলী প্রামানিকের ছেলে খাতের আলী (৫৫) ও তার লোকজন জোড়পূর্বক জমিতে ঘড় উঠায়।
বিষয়টি নিয়ে কয়েকদফা শালিশি বৈঠিক বসলেও কোন সুরাহা হয়নি। গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে জায়গাটি দখল করতে দু’পক্ষের লোকজন জমিতে আসলে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে দু’পক্ষের ৮ জন ব্যক্তি আহত হয়েছে।
আহতরা হলো রানা মিয়া (২৮), আলাউল হক (৩০), লিপন মিয়া (২৬), নাদু ফকির (৪৫), জাহাঙ্গীর প্রাং (২৬), গাদলু (২০), আবু তাহের (২২), ও জহুরুল ইসলাম (৩৫)। আহতদের মধ্যে ৩ জনকে সোনাতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ও ১ জনকে বগুড়া  শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে সোনাতলা থানা সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) বাদশার সাথে কথা বললে তিনি জানান, ঘটনাস্থল তদন্ত করে দু’পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে।


সৈয়দ আহম্মদ কলেজে আকাশ ছোঁয়া বেতন
পরীক্ষার ফি ও ফরম পূরণে শিক্ষার্থীরা হতাশ

গাবতলী ও সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধি ::
বগুড়ার সুখানপুকুরস্থ সৈয়দ আহম্মদ কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে গ্রামগঞ্জের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা হতাশাগ্রস্থ। কলেজটি প্রতিষ্ঠালগ্নে গ্রামগঞ্জের খেটে খাওয়া মানুষের সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত ও উচ্চ শিক্ষাগ্রহনে প্রতিষ্ঠানটির পদ যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে কলেজ কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালীপনা সিদ্ধান্তে খেটেখাওয়া মানুষগুলোর সন্তানদের উচ্চশিক্ষার পথ যেন আজ বাঁধাগ্রস্থ। কলেজটিতে শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন, পরীক্ষার ফি, ভর্তি ও ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কারনে অভিভাবকদের মাঝে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি কলেজটিতে বিভিন্ন অজুহাতে লাখ লাখ টাকা গ্রামের সহজ সরল অশিক্ষিত মানুষদের নিকট থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ বেসরকারি কলেজগুলোর মধ্যে অন্যতম বিদ্যাপিঠ ও ১০ বিষয়ে অনার্স পাঠ দানকারী বগুড়া জেলার সুখানপুকুরস্থ কলেজটি ১৯৭০ সালে এলাকার গণ্যমান্য ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমে হাতে গোনা কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির পদযাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে ওই কলেজটিতে প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক, ডিগ্রী, এইচএসসি ভোকেশনাল ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি কোর্স ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজটিতে বাংলা, ভূগোল, ব্যবস্থাপনা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, হিসাব বিজ্ঞান, মার্কেটিং, ইসলামের ইতিহাস, সমাজকর্ম, গণিত ও প্রাণীবিদ্যা বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু রয়েছে। কলেজটিতে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের প্রতি মাসে মাসিক বেতন দিতে হয় ৮০ টাকা, ডিগ্রি ও অনার্স ক্লাসে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বেতন ২০০ টাকা, কলেজের অভ্যন্তরীন পরীক্ষার ফি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। কলেজের একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির সময় আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা, ডিগ্রিতে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার ও অনার্স এ ছয় থেকে আট হাজার টাকা বিভিন্ন অজুহাতে বিনা রশিদে গ্রহণ করার অভিযোগ রয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি পরীক্ষার ফরম পূরনের বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ফি’র প্রায় তিন গুন গ্রহণ করে বলেও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়। এছাড়াও দুই এক বিষয়ে অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের প্রতি বিষয়ে ৩’শ থেকে ৫’শ টাকা বেশী আদায় করে ফরম পূরনের সুযোগ করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে বগুড়া জেলা প্রশাসকের শিক্ষা ও কল্যান শাখার সহকারী আব্দুল মান্নান জানান, আসন্ন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফরম পূরণে তার পুত্রের নিকট থেকে ৩৪০০ টাকা গ্রহণ করেছে কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃিত বিভাগের শিক্ষক মুঞ্জুরে আলম রাসেল। এছাড়াও একাধিক অভিভাবক জানান, নিভৃত পল্লী এলাকার খেটে খাওয়া মানুষদের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষার জন্য কলেজটি প্রতিষ্ঠা হলেও বর্তমানে কলেজটিতে বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ফলে গ্রাম গঞ্জের খেটে খাওয়া মানুষদের সন্তানদের উচ্চশিক্ষার পথ বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে তারা মনে করেন। ওই কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সহকারী অধ্যাপক জানান, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইদুজ্জামানের স্ত্রী ও দর্শন বিষয়ের শিক্ষক তানজিমা আকতার, কম্পিউটার বিভাগের শিক্ষিকা শামীমা বেগম ও শরীরচর্চা শিক্ষক তানভীর আহম্মদ সোহান কলেজে না এসেও ৬/৭ দিন পরপর এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে। এ বিষয়ে অত্র কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইদুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। উল্লেখিত বিষয়ে এলাকার গন্যমান্য, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গ সহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ।

Ruby